বাড়িতে ডেকে নিয়ে সাবেক স্বামীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

পিটিয়ে হত্যা
প্রতীকী ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় পাওনা টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলে বাড়িতে ডেকে নিয়ে আলাল মিয়া (৩৮) নামের এক ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে আজ সোমবার সকাল আটটার দিকে উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের জয়ধরকান্দি গ্রামে। আলাল মিয়া নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়নের পতুইর গ্রামের ইম্মত আলীর ছেলে। তিনি ঢাকার গুলশান এলাকায় ফেরি করে ঝালমুড়িসহ নানা খাবার বিক্রি করতেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৭ বছর আগে আলালের সঙ্গে জয়ধরকান্দি গ্রামের তারা মিয়ার মেয়ে তানজিনা আক্তারের বিয়ে হয়। তাঁদের সংসারে ১৫ বছরের এক ছেলে ও ১৪ বছরের এক মেয়ে রয়েছে। দুই বছর আগে তাঁদের সম্পর্কের বিচ্ছেদ ঘটে। পরে তাঁরা উভয়ই অন্যত্র পুনরায় বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ২০২০ সালে তানজিনা ও তাঁর বাবার জিম্মায় তারা মিয়ার ভাতিজা কাউসার মিয়ার স্ত্রী শায়লা বেগম সুদে আলাল মিয়ার কাছ থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা ঋণ নেন।

ওই টাকা পরিশোধের কথা বলে গতকাল রোববার আলাল মিয়াকে ডেকে নেন তারা মিয়া ও তাঁর পরিবারের লোকজন। গতকাল আলাল মিয়া তারা মিয়ার বাড়িতে গেলে তারা মিয়া ঋণের টাকা পরিশোধ করেননি। তারা মিয়া ও তাঁর পরিবারের লোকজন আজ সকালে টাকা পরিশোধ করবেন বলে আলাল মিয়াকে প্রতিশ্রুতি দেন। সে অনুযায়ী আজ সকালে টাকা পরিশোধ নিয়ে তানজিনা ও তাঁর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন আলাল। একপর্যায়ে তারা মিয়া ও তাঁর লোকজন আলালকে মারধর করতে থাকেন। এতে আলাল মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে আলালকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন আলালের লাশ জয়ধরকান্দি গ্রামে নিয়ে যান।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আলালের ছেলে জীবন মিয়া (১৫) প্রথম আলোকে বলে, ‘চার বছর আগে আমার বাবার কাছ থেকে মা ও নানার জিম্মায় সাড়ে তিন লাখ টাকা সুদে ঋণ নেন শায়লা বেগম। পরে নানা ও মায়ের কারণে আমার বাবা টাকা পাইতেছিল না। টাকা দেবে বলে তারা বাবারে এইখানে আনছে। আমার মা, নানা, মামা, খালা, শায়লা বেগমসহ সাত থেকে আটজন মিলে আমার বাবারে মারছে। এতে আমার বাবা মারা গেছে। আমি তাদের বিচার চাই।’

সরাইল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আতিকুর রহমান আজ বেলা পৌনে দুইটার দিকে জানান, তিনি ঘটনাস্থলে আছেন। ঘটনার পরপর শ্বশুরবাড়ির লোকজন গা ঢাকা দিয়েছেন। ময়নাতদন্তের জন্য কিছুক্ষণের মধ্যে লাশ জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।