বাকেরগঞ্জে সাবেক যুবলীগ নেতা খুন
বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের সাবেক যুবলীগ নেতা ও ইউপি সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সোমবার রাত পৌনে ৯টার দিকে একদল দুর্বৃত্ত তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করে।
জহিরুল ইসলাম ওরফে হাতকাটা মামুন (৫০) নামের ওই ব্যক্তি ওই ফরিদপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য এবং ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, সোমবার রাত পৌনে ৯টার দিকে ইউনিয়নের ইছাপুরা গ্রামের চৌরাস্তা নামক স্থানে একদল দুর্বৃত্ত তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করে। এতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। ফরিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান সিকদার ইউপি সদস্য মামুনকে হত্যাকাণ্ডের সত্যতা নিশ্চিত করেন।
জহিরুল এলাকায় ভয়ংকর সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি টানা তিনবার নির্বাচিত ইউপি সদস্য। তাঁর বিরুদ্ধে তিনটি হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
ইউপির চৌকিদার আবদুর রহিম প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে জানান, হেঁটে জহিরুল বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। ওঁৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা তাঁর ওপর হামলা করে। তিনি দৌড়ে সড়কের পাশে বাগানের মধ্যে ঢুকে পালানোর চেষ্টা করলে ধাওয়া করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপানো হয় তাঁকে। রহিম আরও জানান, সব কটি কোপ তাঁর মাথায় লাগে। এতে মগজ বের হয়ে যায়। হামলকারীরা গুলি করলেও তা জহিরুলের গায়ে লাগেনি বলে জানান রহিম।
বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মাকসুদুর রহমান জানান, স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে খবর পেয়েছেন ইউপি সদস্য জহিরুল খুন হয়েছেন। এলাকাটি দুর্গম এবং উপজেলা সদর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে হওয়ায় সেখানে পৌঁছাতে সময় লাগছে। পুলিশ সদস্যদের নিয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন।
পুলিশের একটি সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১৯ মার্চ রাতে বাকেরগঞ্জ উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের সোনাপুরা গ্রামে পূর্বশক্রতার জের ধরে বসতবাড়িতে ঢুকে বেধড়ক কুপিয়ে জখম করা হয় রবিউল ইসলাম ওরফে রনি মোল্লা এবং তাঁর দুই ভাই শহিদুল ইসলাম ওরফে সোহেল (২৫) ও তৌহিদুল ইসলাম ওরফে তৌকিরকে (২২)। এরপর এই তিনজন গুরুতর আহত অবস্থায় স্পিডবোটে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর রাত সাড়ে তিনটার দিকে রবিউল মারা যান।
রবিউল মারা যাওয়ার পর তাঁর বাবা মো. ইয়াছিন মোল্লা গত বছরের ২১ এপ্রিল বাকেরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় ১ নম্বর আসামি করা হয়েছিল জহিরুলকে। পরে ওই বছরের ৩০ এপ্রিল র্যাবের-৮ সদস্যরা জহিরুলকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করেছিলেন।
এর আগে ২০১৬ সালের ১১ জুন সন্ধ্যায় বাকেরগঞ্জ উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নে মহিউদ্দিন হাওলাদার নামের এক আওয়ামী লীগ কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ওই মামলারও প্রধান আসামি ছিলেন জহিরুল।
পুলিশ সূত্র জানায়, ইউপি সদস্য জহিরুলের বিরুদ্ধে খুন, সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজি, মাদকসহ বিভিন্ন অভিযোগে বাকেরগঞ্জ ও বিভিন্ন থানায় ২২টি মামলা রয়েছে।
বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে কয়েক বছর আগে জহিরুলকে প্রতিপক্ষের লোকজন কুপিয়ে তাঁর ডান হাত কেটে দেয়।