নিখোঁজ এসএসসি পরীক্ষার্থী ছেলের সন্ধানে কেন্দ্রের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন বাবা

নিখোঁজ ছেলের ছবি হাতে বাবা এজাজুল হক। আজ বৃহস্পতিবার সকালে নাটোর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের সামনেছবি: প্রথম আলো

ছেলের বড় একটি ছবি বুকের সঙ্গে ধরে নাটোর বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রের ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন এজাজুল হক। তাঁর চোখ ফটকের দিকে। অপেক্ষা ছেলের জন্য। পরীক্ষা শুরু হওয়ার পরও তিনি দাঁড়িয়ে ছিলেন সেখানে।

এজাজুল হক জানান, তাঁর ছেলে মুনতাহা এহসান (মুগ্ধ) নাটোর সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র। আজ বৃহস্পতিবার বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গত সোমবার বিকেলে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর থেকে সে নিখোঁজ। নানা চেষ্টার পরও তার খবর পায়নি পরিবার।

এজাজুল হক বলেন, তাঁর ধারণা ছিল, ছেলে অন্তত পরীক্ষা মিস করবে না। যেখানেই থাকুক আজ পরীক্ষায় অংশ নেবে সে। সেই আশায় তিনি কেন্দ্রের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। কিন্তু ছেলে আসেনি। তিনি বলেন, ‘ছেলের পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার আশা শেষ হয়েছে। কিন্তু ছেলেকে ফিরে পাওয়ার আশা তো শেষ হয়নি। নানা রকমের দুশ্চিন্তায় আমি, ওর মা ও বড় বোন প্রতিটি মুহূর্ত পার করছি।’

মা মাহফুজা খাতুন বলেন, ‘মুগ্ধ আমার একমাত্র ছেলে। সে বিদ্যালয় ও মসজিদ ছাড়া বাড়ির বাইরে আর কোথাও যেত না। ভালো পরীক্ষা দেওয়ার পরও সে বিদ্যালয়ের টেস্ট পরীক্ষায় খারাপ করে। সে এটা মানতে পারছিল না। খুব মন খারাপ করেছিল। আমরা তাকে বুঝিয়েছি, বোর্ড পরীক্ষায় ভালো করতে হবে। বকঝকা করিনি। সে পরীক্ষার প্রস্তুতিও নিচ্ছিল। হঠাৎ এভাবে নিখোঁজ হয়ে যাবে, ভাবতেও পারছি না।’

নাটোর সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক আকরাম হোসেন বলেন, পরীক্ষার আগমুহূর্তে মুগ্ধ এভাবে নিখোঁজ হওয়ায় শিক্ষকদেরও মন খারাপ। তাঁরাও ভেবেছিলেন, হয়তো সে এসে পরীক্ষা দেবে। কিন্তু পরীক্ষার হলে তার আসন ফাঁকা ছিল।

নাটোর সদর থানার উপপরিদর্শক জামাল উদ্দিন মুগ্ধর নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাটি তদন্ত করছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা গুরুত্বসহকারে বিষয়টি দেখছি। ওর ব্যাপারে পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করছি। বিভিন্ন থানায় বেতার বার্তা দেওয়া হয়েছে। তার সন্ধানে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’