ইউপি চেয়ারম্যানকে সহায়তা, শ্রীপুরে বিএনপির ২ নেতাকে অব্যাহতি

অব্যাহতি পাওয়া বিএনপি নেতা মো. মশিউর রহমান (বাঁয়ে) ও এম এ গণিছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের শ্রীপুরে সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বিএনপির দুই নেতাকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার এক চিঠিতে তাঁদের অব্যাহতি দেওয়ার কথা জানায় জেলা বিএনপি। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ রিয়াজুল হান্নান বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন।

অব্যাহতি পাওয়া দুই নেতা হলেন উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ও গাজীপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. মশিউর রহমান (নয়েছ) এবং উপজেলা বিএনপির কৃষিবিষয়ক সম্পাদক ও গাজীপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম এ গণি (মৈশাল)। সম্প্রতি তাঁদের বিরুদ্ধে গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সিরাজুল হক মাদবরকে সহযোগিতা করার অভিযোগ ওঠে। সিরাজুল হক মাদবর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি।

আওয়ামী লীগের ওই নেতাকে সহায়তার অভিযোগে গত ২৫ আগস্ট ওই দুই নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় উপজেলা বিএনপি। ১৫ দিনের মধ্যে নোটিশের জবাব দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জবাব দেওয়ার তিন দিন বাকি থাকতেই তাঁদের অব্যাহতি দেয় জেলা বিএনপি।

জেলা বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বে থাকা জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) গাজীপুর জেলা শাখার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ, সংগঠনবিরোধী কার্যকলাপের স্পষ্ট প্রমাণ থাকায় তাঁদের নিজ নিজ পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এই অব্যাহতিপত্র জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক (মিলন) ও সাধারণ সম্পাদক শাহ রিয়াজুল হান্নান অনুমোদন দিয়েছেন।

উপজেলা বিএনপির একাধিক নেতা জানান, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে ‘বিতর্কিত’ পদ্ধতিতে নির্বাচিত হওয়া সিরাজুল হক মাদবরকে সহযোগিতা করছিলেন অব্যাহতি পাওয়া দুই নেতা। যখন চেয়ারম্যান জনরোষের কারণে দীর্ঘদিন ইউপি কার্যালয়ে আসতে পারছিলেন না, তখন তাঁরা সশরীরে উপস্থিত থেকে চেয়ারম্যানকে কার্যালয়ে বসান। ওই চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে গত ২৫ আগস্ট দিনভর বিক্ষোভ করেন ছাত্র-জনতা। তাঁকে সহযোগিতার মাধ্যমে অব্যাহতি পাওয়া নেতারা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন।

এ বিষয়ে অব্যাহতি পাওয়া মশিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি চেয়ারম্যানকে সহযোগিতা করতে যাইনি। সাধারণ মানুষের প্রত্যাখ্যান সত্ত্বেও তিনি কেন ইউপি কার্যালয়ে এসেছেন, তা জানতে গিয়েছিলাম।’ তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘উপজেলা বিএনপির শোকজের উত্তর দেওয়ার আগেই আমাকে হুট করে জেলা বিএনপি অব্যাহতি দিয়েছে। আমাকে জবাব দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি। আমার বিরুদ্ধে দলের ভেতর থেকে ষড়যন্ত্র করে এটি করা হয়েছে।’

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ রিয়াজুল হান্নান প্রথম আলোকে বলেন, দলীয় শৃঙ্খলাপরিপন্থী কার্যকলাপের কারণে ওই দুজনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে এবং এই সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় বিএনপিকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই অব্যাহতির ফলে তাঁদের সঙ্গে বিএনপির সাংগঠনিক কোনো সম্পর্ক থাকবে না।