মেয়ের বিয়ের জন্য তোলা ১০ লাখ টাকা, স্বর্ণালংকার পুড়ে ছাই, দিশাহারা মা–বাবা

দিনাজপুরের বিরামপুর পৌর শহরের ঢাকা মোড়ে রতন সাহার বাড়িতে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুন লেগে পুড়ে যাওয়া বাড়ির আসবাবপত্রছবি: প্রথম আলো

মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে খরচ করতে স্থানীয় দুটি ব্যাংক থেকে ১০ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন রতন সাহা। মেয়ের জন্য কিনেছিলেন স্বর্ণালংকার। বাড়িতে চলছিল বিয়ের প্রস্তুতি। এর মধ্যে গতকাল শনিবার দুপুরে বাড়ির রান্নাঘরে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুন ধরে। মুহূর্তের মধ্যে তা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।

আগুনে শিখায় বাড়ির সব শয়নকক্ষে থাকা আসবাব ও মেয়ের বিয়ের জন্য গচ্ছিত ঢাকা পুড়ে ছাই হয়। খোয়া যায় স্বর্ণালংকারও। এখন মেয়ের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা কীভাবে সারবেন তা নিয়ে দিশাহারা এই বাবা।

গতকাল দুপুর ১২টার দিকে দিনাজপুরের বিরামপুর পৌর শহরের ঢাকা মোড় এলাকায় ব্যবসায়ী রতন সাহার বাড়িতে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, দুপুরে রান্নাঘরে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুন লাগে। পরে বাড়ির তিনটি শয়নকক্ষ, একটি ঠাকুরঘর এবং বাড়ির বারান্দায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় স্থানীয় লোকজন বিরামপুর ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন। পরে বিরামপুর, ফুলবাড়ী ও নবাবগঞ্জ উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিট ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। সেখানে টানা এক ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।

আগুন নেভাতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন বিরামপুর ফায়ার সার্ভিসের সদস্য সজল হোসেন। পরে সহকর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান
ছবি: প্রথম আলো

বিরামপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের দলনেতা আবদুল আজিজ প্রথম আলোকে বলেন, বিরামপুরের ঢাকা মোড়ে একটি বাড়িতে আগুন লাগার খবর পেয়ে তাঁরা ঘটনাস্থলে যান। পরে ফুলবাড়ী ও নবাবগঞ্জ উপজেলা থেকে ফায়ার সার্ভিসের আরও দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে আসে। এক ঘণ্টার অভিযানে সেখানকার আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এ সময় ওই বাড়ি থেকে প্রায় ৯০ লাখ টাকার সম্পদ উদ্ধার করা হয়েছে। আরও প্রায় ৩০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

রতন সাহার স্ত্রী সমাপ্তি সাহা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের মেয়ের বিয়ের কথা চলছিল। চলতি সপ্তাহে দুপক্ষের আলোচনায় বিয়ের দিন নির্ধারণের কথা ছিল। এ জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। মেয়ের বিয়েতে খরচের জন্য গত সপ্তাহে বিরামপুরের দুটি ব্যাংক থেকে ১০ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছি। বাড়িতে ১২ ভরি সোনার গয়না ছিল। আগুনে পুড়ে সব শেষ হয়ে গেল। এখন আমাদের কী হবে ভগবানই জানেন।’