ফরিদপুরে মধ্যরাতে রক্ত দিতে বের হয়ে কলেজছাত্র খুন

ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নিহত কলেজছাত্র প্রান্ত মিত্র
ছবি: সংগৃহীত

বন্ধুর বোনকে রক্ত দিতে রাত দুইটার দিকে বাসা থেকে বের হন ফরিদপুরের কলেজছাত্র প্রান্ত মিত্র (২৩)। এর আধা ঘণ্টা পর শহরের আলীপুর সেতুর উত্তর প্রান্তে সড়কের পাশ থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে কোতোয়ালি থানার পুলিশ। গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত প্রান্তের গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ী জেলার পাচুরিয়া গ্রামে। তাঁর বাবা বিকাশ মিত্র শহরের দীপ শিখা স্কুলে শিক্ষকতা করেন। মা–বাবার সঙ্গে শহরের ওয়্যারলেসপাড়া এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে বসবাস করেন প্রান্ত। তিনি ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের অনার্স (উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগ) তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন।

কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শামিম হোসেন জানান, পথচারীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে আলীপুর সেতুসংলগ্ন এলাকায় গিয়ে প্রান্তের মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। তাঁর বুকের বাঁ পাশে ধারালো অস্ত্রের গভীর ক্ষত রয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহটি আজ মঙ্গলবার সকালে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।

প্রান্ত মিত্রের বন্ধু হৃদয় প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর বোন ফরিদপুরের ডা. জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গতকাল রাতে তাঁর বোনের রক্তের প্রয়োজন হয়। এ সময় হৃদয় প্রান্তকে ফোন দেন। রাত দুইটার দিকে রক্ত দেওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হন প্রান্ত। রাত বাড়তে থাকলেও প্রান্ত হাসপাতালে না আসায় তিনি চিন্তিত হয়ে পড়েন। বারবার প্রান্তকে ফোন করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

প্রান্তের বাবা বিকাশ মিত্র বলেন, বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর অনেক দেরি হয়ে গেলেও প্রান্ত ফিরে আসেননি। পরে তাঁর বন্ধু হৃদয়কে ফোন করেন তিনি। হৃদয় জানান, প্রান্ত হাসপাতালেও যাননি।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, যে জায়গা থেকে প্রান্তের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, সেখানে কোনো রক্তের আলামত পাওয়া যায়নি। তাঁকে ছিনতাইকারীরা খুন করেছে, নাকি এ হত্যার পিছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রান্ত স্বেচ্ছাসেবক লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। গতকাল সোমবার ফরিদপুরে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতি পদপ্রত্যাশী ছিলেন শহরের ঝিলটুলী মহল্লার বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম। প্রান্ত তাঁর অনুসারী হিসেবে মিছিল নিয়ে সম্মেলনে যোগ দেন। ওই সম্মেলনে কমিটি ঘোষণা করা হয়নি।

জহিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রান্তের মৃত্যু ছিনতাইকারীদের হাতে ঘটেছে বলে মনে হয় না। এর পেছনে অন্য উদ্দেশ্য থাকতে পারে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’