রাজশাহীতে ‘মনগড়া’ এজাহার করার অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে
রাজশাহীর মোহনপুরে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা সাদ্দাম হোসেনকে (৩৩) হত্যার ঘটনায় পুলিশ ‘মনগড়া’ এজাহার তৈরি করে বাদীর স্বাক্ষর নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বাদী। আজ সোমবার দুপুরে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন নিহত সাদ্দামের স্ত্রী ও মামলার বাদী রেহেনা বিবি।
সাদ্দাম হোসেন মোহনপুরের ধুরইল ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি ছিলেন। গত ২৬ সেপ্টেম্বর তিনি খুন হন।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই এলাকার আওয়ামী লীগ কর্মী একছার আলীর সঙ্গে আগে থেকেই বিরোধ ছিল সাদ্দামের। রাজনৈতিক ব্যাপারে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে সাদ্দামকে কোপাতে শুরু করেন একছার। তাঁকে রক্ষায় ভাই বুলবুল হোসেন এগিয়ে গেলে তাঁকেও হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে আহত করা হয়। সেদিন ঘটনাস্থলেই মারা যান সাদ্দাম। আর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হন ভাই বুলবুল। বুলবুল মোহনপুরের ধুরইল ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড কৃষক দলের সদস্য।
সংবাদ সম্মেলনে বুলবুল হোসেন বলেন, ঘটনার পরই এলাকাবাসী একছার আলীকে আটক করে পুলিশে দেন। পরে থানায় মামলা করতে যান সাদ্দামের স্ত্রী রেহেনা বিবি। তখন পুলিশেরই প্রস্তুত করা একটি এজাহারে রেহেনার স্বাক্ষর নেওয়া হয়। মামলা হওয়ার পর তাঁরা দেখেন, পুলিশের করা মামলার এজাহারের বর্ণনার সঙ্গে ঘটনার কোনো মিল নেই।
বুলবুল দাবি করেন, এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আরও কয়েকজন জড়িত ছিলেন। কিন্তু প্রকৃত ঘটনাকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার জন্য হত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। মামলায় পুলিশ একছার আলী ছাড়াও আরও কয়েকজনকে আসামি করে। কিন্তু অন্য আসামিরা হত্যার সঙ্গে জড়িত নন। তাই প্রকৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তাঁরা আবার মামলা করতে থানায় গিয়েছিলেন। পুলিশ তাঁদের কথা না শুনে থানা থেকে বের করে দিয়েছে।
বুলবুল জানান, পুলিশের প্রস্তুত করা এজাহার ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় তিনি বাদী হয়ে আদালতে আরেকটি মামলা করেছেন। এ মামলায় প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। এ মামলা করার পর থেকে আসামিরা তাঁদের নানাভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। তাঁরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় আছেন।
মনগড়া এজাহার করার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মোহনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল হান্নান বলেন, ‘এজাহার রেডি করার পর বাদীকে পড়ে শোনানো হয়েছিল। তারপর স্বাক্ষর নিয়ে মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। মনগড়া এজাহার করার অভিযোগ সঠিক নয়।’ আদালতে আরেকটি মামলা করার বিষয়ে ওসি বলেন, ‘একই ঘটনায় তো দুটি মামলা চলে না। এখন এটা আদালতের বিষয়। আমি কিছু বলতে পারব না। মামলাটি তদন্ত করে আমরা অভিযোগপত্র দেব।’