কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের হাতে সহকারী প্রক্টর লাঞ্ছিত
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছাত্র হলে দায়িত্বপালনের সময় ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন এক সহকারী প্রক্টর। গতকাল সোমবার রাত ৯টায় বঙ্গবন্ধু হলে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখে প্রক্টরিয়াল বডি এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে আজ মঙ্গলবার প্রাথমিক প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
লাঞ্ছনার শিকার সহকারী প্রক্টরের নাম অমিত দত্ত। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, নৃবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী আমিনুর বিশ্বাস বঙ্গবন্ধু হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। কয়েক মাস আগে তাঁকে হল থেকে বের করে দেয় ছাত্রলীগ। তিনি মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতিও।
গতকাল সন্ধ্যার পর আমিনুর আবার হলে উঠতে যান। এ সময় ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা তাঁকে হলে উঠতে বাধা দেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। খবর পেয়ে প্রক্টরিয়াল বডির লোকজন হলে উপস্থিত হন। বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্টা করেন হল প্রাধ্যক্ষ মোকাদ্দেস উল ইসলাম ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা।
এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এনায়েত উল্লাহর নেতৃত্বে ছাত্রলীগের একদল নেতা–কর্মী। তাঁরা সেখানে গিয়ে হইচই শুরু করেন। তখন সহকারী প্রক্টর অমিত দত্ত তাঁদের শান্ত হওয়ার অনুরোধ করেন। একপর্যায়ে এনায়েত উল্লাহর নেতৃত্বে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা–কর্মী সহকারী প্রক্টরের দিকে তেড়ে যান এবং তাঁকে লাঞ্ছিত করেন। এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজেও ছাত্রলীগ নেতা–কর্মীদের তেড়ে যাওয়ার বিষয়টি দেখা গেছে।
সহকারী প্রক্টর অমিত দত্ত বলেন, ‘আমাকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। আমি এই ঘটনার বিচার চাই।’ তবে অভিযোগ প্রসঙ্গে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘আমি কারও দিকে তেড়ে যাইনি, কিছু করিনি। তবে ঘটনাস্থলে ধাক্কাধাক্কি হয়েছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আমিনুর বিশ্বাস বলেন, ‘আমি বঙ্গবন্ধু হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। আমাকে একসময় ছাত্রলীগের ভিন্ন গ্রুপ করার কারণে হল থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। এখন আমি হলে উঠতে গেলে বাধা দেওয়া হয়।’
হলের প্রাধ্যক্ষ মো. মোকাদ্দেস উল ইসলাম বলেন, ‘এই ঘটনা দুঃখজনক। আমরা হলে শিক্ষার ও থাকার সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে আনব।’ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, ‘সবার সামনে ঘটনা ঘটেছে। ভিডিও ফুটেজেও তা রয়েছে। জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’