মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কুতুবপুরে এক্সপ্রেসওয়েতে আজ রোববার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে দুর্ঘটনায় নিহত ১৯ জনের মধ্যে ১৭ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এই ১৭ জনের লাশই পরিবারের কাছে বেলা ৩টার মধ্যে হস্তান্তর করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে সাতজনের বাড়ি গোপালগঞ্জে।
পুলিশ ও শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১৯ জনের মধ্যে ১৭ জনের লাশ শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একটি ঘরে রাখা হয়। বাকি দুজনের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আছে। সবার পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে।
শনাক্ত হওয়া ব্যক্তিরা হলেন গোপালগঞ্জে গোপীনাথপুর এলাকার তৈয়ব আলীর ছেলে হেদায়েত মিয়া, বনগ্রাম এলাকার শামসুল শেখের ছেলে মোস্তাক আহমেদ, সদর উপজেলার নশর আলী শেখের ছেলে সজীব শেখ, পাচুরিয়া এলাকার মাসুদ হোসেনের মেয়ে সুইটি আক্তার, টুঙ্গিপাড়ার কাঞ্চন শেখের ছেলে করিম শেখ, সদর উপজেলার আবু হেনা মোস্তফার মেয়ে আফসানা মিমি ও মুকসুদপুর এলাকার আমজেদ আলীর ছেলে মাসুদ আলী; খুলনার সোনাডাঙা এলাকার শেখ মোহাম্মদ আলীর ছেলে আবদুল্লাহ আল মামুন, সাউথ মেন্টাল রোড এলাকার চিত্ত রঞ্জন ঘোষের ছেলে চিন্ময় প্রসূন ঘোষ, ডুমুরিয়া এলাকার পরিমল সাদুখা ছেলে মহাদেব কুমার সাদুখা, আমতলা এলাকার শাহজাহান মোল্লার ছেলে আশফাকুর জাহান লিংকন; বাগেরহাট জেলা শহরের শান্তি রঞ্জন মজুমদারের ছেলে অনাদি মজুমদার; ফরিদপুরের হিদাডাঙ্গা এলাকার সৈয়দ মুরাদ আলীর ছেলে মো. ইসমাইল হোসেন; নড়াইলের লোহাগড়া এলাকার বকু শিকদারের ছেলে ফরহাদ শিকদার; ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আলী আকবরের ছেলে ও ইমাদ পরিবহন বাসটির চালক জাহিদ হাসান, চালকের সহকারী মিরাজ এবং পাবনার সুজানগরের গহর আলীর ছেলে ইউসুফ আলী।
আর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে মিনহাজ বিশ্বাস (২২) ও শেখ আলী আকবরের (৭৫) লাশ। মিনহাজ গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মানিকদি গ্রামের মিজানুর রহমান বিশ্বাসের ছেলে। আলী আকবরের বাড়ি বাগেরহাটের রামপাল উপজেলায়।
শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজিবুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের এখানে ১৭ জনের লাশ আছে। এর মধ্যে ১৬ জনের পরিচয় শনাক্ত শেষে আমরা লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছি। একজনের লাশ এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে আমরা ২৫ হাজার টাকা আর্থিক সহযোগিতা দিয়েছি।’
এই ১৯ জনের মধ্যে ১৪ জনের লাশ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি পাঁচজনের মধ্যে তিনজনকে আহত অবস্থায় শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেওয়ার পথে মারা যান। আর দুজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন। দুর্ঘটনায় ১৯ জনের মৃত্যুর খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মাদারীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাসুদ আলম।
খুলনা থেকে ঢাকাগামী যাত্রীবাহী ইমাদ পরিবহনের বাসটির সামনের ডান পাশের চাকা এক্সপ্রেসওয়েতে ফেটে যায়। আজ সকাল সাড়ে সাতটার দিকে মাদারীপুরের শিবচরের পদ্মা সেতুর এক্সপ্রেসওয়ের কুতুবপুর এলাকায় চালক নিয়ন্ত্রণ হারান। এতে বাসটি রেলিং ভেঙে খাদে পড়ে দুমড়েমুচড়ে যায় বলে জানিয়েছেন মাদারীপুরের এসপি মো. মাসুদ আলম।