শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পদত্যাগপত্রে সই করলেন রাজশাহী কলেজের নতুন অধ্যক্ষ
যোগ দিতে এসে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পদত্যাগপত্রে সই করেছেন প্রতিষ্ঠানটির নতুন অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আনারুল হক। আজ মঙ্গলবার দুপুর সোয়া দুইটার দিকে একটি সাদা কাগজে পদত্যাগপত্র লিখে উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ইব্রাহিম আলীর কাছে জমা দেন তিনি। শিক্ষার্থীদের দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎসহ দুর্নীতির বেশ কিছু অভিযোগ আছে।
পদত্যাগপত্রে অধ্যাপক আনারুল লিখেছেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে পদত্যাগ করলাম। বিষয়টি সদয় বিবেচনার জন্য প্রেরণ করা হলো।’
এ ব্যাপারে অধ্যাপক আনারুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তাঁর পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ইব্রাহিম আলী। তিনি বলেন, বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে। তারাই পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নতুন কর্মস্থলে (রাজশাহী কলেজ) যোগ দিতে আসেন অধ্যাপক মো. আনারুল হক। এর কিছুক্ষণ আগে সেখানে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত হন। নতুন অধ্যক্ষকে শুভেচ্ছা জানাতে কিছু শিক্ষার্থী স্লোগান দিতে শুরু করেন। তবে প্রশাসন ভবনে তালা লাগিয়ে শিক্ষার্থীদের আরেকটি পক্ষ আগে থেকেই সেখানে অবস্থান নেয়। পরে সেনাবাহিনী ও বিজিবির সদস্যদের সহযোগিতায় অধ্যক্ষ আনারুল হক প্রশাসন ভবনের ভেতরে প্রবেশ করেন। এ সময় উভয় পক্ষের শিক্ষার্থীরা পাল্টাপাল্টি স্লোগান দিতে থাকেন।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, গত ৯ সেপ্টেম্বর রাজশাহী কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পান অধ্যাপক আনারুল হক। এর আগে তিনি শহীদ বুদ্ধিজীবী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। এ ছাড়া রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দায়িত্বও পালন করেছেন তিনি। সেখানে দায়িত্বরত অবস্থায় (২০১৬-১৭ অর্থবছর) তিনিসহ আরও কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বোর্ডের ১৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ ওঠে। এর ভিত্তিতে ২০২০ সালে তিনটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পরে অবশ্য মামলা থেকে অব্যাহতি পান আনারুল।
নিয়োগের পর থেকেই অধ্যাপক আনারুলের বিরোধিতা করে আন্দোলন করে আসছিলেন কলেজটির শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, বাইরের কলেজের এক অধ্যক্ষকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করেছেন। শিক্ষা বোর্ডে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক থাকাকালে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেছিল। তিনি সাবেক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের মদদে বুদ্ধিজীবী কলেজের পদও দখল করেছেন।
তবে অধ্যাপক আনারুল হক এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিলেন। তিনি বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে করা দুদকের মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন। তিনি কোনো দলের হয়ে কাজ করেননি।
গত ১২ আগস্ট শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বদলির আবেদন করেন রাজশাহী কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ মোহা. আবদুল খালেক। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ছিল, কোটা সংস্কার আন্দোলনে অধ্যক্ষ আবদুল খালেককে পাশে পাননি তাঁরা।