বাল্যবিবাহ করে চাকরি খুইয়ে একে একে ১৩টি বিয়ে, অবশেষে ধরা
বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে চাকরি করতেন। দুই বছর চাকরির পর নিয়ম অমান্য করে বাল্যবিবাহ করে চাকরিচ্যুত হয়েছিলেন। এরপর বিয়ে করাই তাঁর পেশা ও নেশা হয়ে যায়। দেশের বিভিন্ন জেলায় একে একে ১৩টি বিয়ে করেছেন। বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ি থেকে টাকা হাতিয়ে নিতেন। অবশেষে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন ২৭ বছর বয়সী মহিদুল ইসলাম ওরফে মইদুল।
শনিবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ওই যুবকের বিষয়ে এসব তথ্য জানান ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা। এর আগে গাজীপুর থেকে মহিদুলকে গ্রেপ্তার করে ময়মনসিংহ জেলার গোয়েন্দা পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ময়মনসিংহের তারাকান্দা থানায় প্রতারণার মাধ্যমে বিয়ে করার অভিযোগে একটি মামলা হয়। ওই মামলায় মহিদুলসহ পাঁচজনকে আসামি করা হয়। মহিদুল ছাড়াও কুদ্দুস আলী নামের আরও একজনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। কুদ্দুস মহিদুলের বিয়ের ঘটক হিসেবে কাজ করতেন।
পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা বলেন, মহিদুলের বাড়ি মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার চরকাটারী এলাকায়। বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে নিম্ন মাধ্যমিক কর্মচারী সদস্য (এমএলএসএস) হিসেবে দুই বছর চাকরি করেছেন। বিধিবহির্ভূতভাবে বাল্যবিবাহ করায় তাঁর চাকরি চলে যায়। এর পর থেকে প্রতারণার মাধ্যমে বিয়ে করাকেই পেশা হিসেবে বেছে নেন তিনি। বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ি থেকে টাকা হাতিয়ে নিতে চক্রও তৈরি করেন। মহিদুল মানিকগঞ্জে ৩টি, টাঙ্গাইলে ৩টি, কিশোরগঞ্জে ১টি ও ময়মনসিংহে ৬টি বিয়ে করেছেন। এসব বিয়ের পর অর্ধকোটি টাকা হাতিয় নিয়েছেন। তাঁর প্রতারণার ফাঁদ থেকে প্রতিবন্ধী নারীও রেহাই পাননি।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বিয়ে করার জন্য নিজেকে নৌবাহিনীর ভুয়া পরিচয় দিতেন। নিজের সাজানো ঘটকের মাধ্যমে এসব বিয়ে করেছেন। বিয়েগুলো শুধু ধর্মীয় রীতি মেনে করেছেন। গ্রেপ্তারের পর মহিদুলের কাছে নৌবাহিনীর ভুয়া আইডি কার্ড, বাহিনীর ব্যবহার্য ট্রাকসুট ও বিভিন্ন বাহিনীর ইউনিফর্ম পরিহিত ছবি পাওয়া গেছে।
ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুক হোসেন বলেন, তারাকান্দা থানার মামলায় মহিদুলকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলার বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।