নরসিংদীর নাছিমা কাদির মোল্লা স্কুলে বাহারি ফল ও পিঠা উৎসব
নরসিংদীর নাছিমা কাদির মোল্লা হাইস্কুল অ্যান্ড হোমসে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বাহারি ফল ও পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শনিবার দিনভর বিদ্যালয়ের মাঠে ৪৮টি স্টলে ফল ও পিঠার প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। বিকেলে লাঠিখেলা ও সাংস্কৃতিক পর্বের মধ্য দিয়ে শেষ হয় উৎসব।
উৎসবে গিয়ে দেখা যায়, ছাত্রদের স্টলগুলো সাজানো ছিল বাহারি সব ফল দিয়ে আর ছাত্রীরা স্টলে প্রদর্শন করে বাড়ি থেকে তৈরি করে আনা শতাধিক ধরনের পিঠা। অভিভাবকসহ আগত সব দর্শনার্থীর কাছে এসব ফলের গুণাগুণ ও পিঠার ইতিহাস বর্ণনা করে শিক্ষার্থীরা।
বৈচিত্র্যময় ফলের মধ্যে ছিল অ্যাভোকাডো, সূর্যডিম আম, ব্যানানা ম্যাঙ্গো, আলুবোখারা, চেরি, রাম্বুটান, কিউই, মিষ্টি তেঁতুল, রকমেনন, ত্বিন ফলসহ বাহারি সব দেশি ফল। অন্যদিকে পিঠার মধ্যে ছিল জামাই আদর, বিবিখানা, চন্দ্রপুলি, শংসা, হাতের সেমাই, খিলি, ডিমসুন্দরী, ভাপা, নারিকেল দুধপুলি, পাটিসাপটা, আনারকলি, দুধসাগর ও চিতই পিঠা।
৪২ নম্বর স্টলের নাম ‘জামাই যাবে শ্বশুরবাড়ি, নিয়ে যাবে পিঠার হাঁড়ি’। স্টলে গিয়ে দেখা গেল, অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ৫২ ধরনের পিঠার পসরা সাজিয়েছে। দলনেতা মাহবুবা কামাল জানায়, তারা দলে দলে ভাগ হয়ে বাড়ি থেকে মায়েদের সহযোগিতায় এসব পিঠা তৈরি করে এনেছে। উৎসবে তারা বেশ আনন্দিত। স্টলে আসা ব্যক্তিদের পিঠা সম্পর্কে বর্ণনা দিচ্ছে। তাদের স্টলের উল্লেখযোগ্য পিঠার মধ্যে ছিল কমলাপুলি ও ডিমসুন্দরী।
‘দাদি-নানির ভালোবাসা’ নামের আরেকটি স্টলে ৯২ ধরনের পিঠা সাজানো হয়েছে। বিদ্যালয়টির ইংরেজির শিক্ষক লাবণী রানী কুণ্ডুর পরিচালনায় দুই শিক্ষার্থী দাদি ও নানি সেজে ছিল। স্টলে উল্লেখযোগ্য পিঠার মধ্যে ছিল জামাই আদর, বিবিখানা, চন্দ্রপুলি ও শংসা পিঠা।
২৫ নম্বর স্টলটির নাম ইউনিক ফ্রুট ভিলেজ। নবম শ্রেণির ছাত্ররা অ্যাভোকাডো, আলুবোখারা, ত্বিন ফলসহ ৬৩ ধরনের ফলের সমাহার ঘটায়। ‘ফ্রুকটোজ’ নামের ২৩ নম্বর স্টলে ছিল ৬৫ ধরনের ফল। জাপানের সূর্যডিম আম ও মালয়েশিয়ার রাম্বুটান ফল প্রদর্শনের পাশাপাশি ভার্টিক্যাল প্ল্যান্টের মাধ্যমে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ কৌশল দেখাচ্ছিল তারা। এ ছাড়া ফল রাসায়নিকমুক্ত করার কৌশলও উপস্থাপন করে শিক্ষার্থীরা।
বিকেল পাঁচটায় উৎসব মঞ্চে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা নাছিমা বেগম। প্রধান শিক্ষক ইমন হোসেনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজের অধ্যক্ষ মাহমুদুল হাসান। এর আগে অতিথিরা স্টল ঘুরে ঘুরে ফল ও পিঠা চেখে দেখেন।
নাছিমা বেগম তাঁর বক্তব্যে বলেন, বাঙালির হাজার বছরের সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে আছে বাহারি সব ফল আর পিঠা। গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী নানা স্বাদের পিঠা ও নানা ধরনের ফলের ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য এ আয়োজন।