দুর্নীতির অভিযোগে বগুড়ার শেরপুরের মেয়রসহ তিনজনকে সাময়িক বরখাস্ত
দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বগুড়ার শেরপুর পৌরসভার মেয়র জানে আলমকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে পৌরসভার প্রশাসনিক ও দাপ্তরিক কাজের জন্য ১ নম্বর প্যানেল মেয়র নাজমুল আলমকে মেয়রের আর্থিক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
গতকাল রোববার স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মো. আবদুর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপন সূত্রে জানা গেছে, মেয়র মো. জানে আলমের বিরুদ্ধে পৌরসভার দোকান বরাদ্দের নামে অর্থ আত্মসাৎ, বিধিবহির্ভূতভাবে বাস টার্মিনালের ইজারা মওকুফ, অনিয়মতান্ত্রিকভাবে মাস্টাররোলে কর্মচারী নিয়োগ, জিপগাড়ি মেরামতের নামে অতিরিক্ত বিল পরিশোধ, ২২৮টি দোকান বরাদ্দ না দেওয়া, পৌরসভার বিভিন্ন ক্রয়ে দুর্নীতি ও অনিয়ম, পৌরসভার গৃহকর মূল্যায়নে দুর্নীতি, ইমারত ও ভূমির ওপর অতিরিক্ত কর আদায়সংক্রান্ত অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। এ জন্য তাঁকে মেয়রের পদ থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়।
পৌরসভা–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শেরপুর পৌরসভার সান্যালপাড়া এলাকার বাসিন্দা নাজমুল হক গত বছরের ১৬ এপ্রিল স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন। সেখানে তিনি পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে ২১টি বিষয়ে অর্থ আত্মসাৎ ও বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরেন। অভিযোগের তদন্তের জন্য রাজশাহী বিভাগের স্থানীয় সরকার পরিচালকের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে কিছু অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হওয়ায় ২৭ মার্চ মেয়রকে কারণ দর্শানোর চিঠি দিয়েছিল তদন্ত কমিটি।
সাময়িক বরখাস্তের ঘটনায় জানে আলম প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে যে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা সত্য নয়। তিনি এ ব্যাপারে আইনগতভাবে পদক্ষেপ নেবেন।
পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা ও কাউন্সিলরও বরখাস্ত
সাত লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে শেরপুর পৌরসভার পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরোজ মুজিব ও পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফিরোজ উদ্দীন আহমেদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
আজ সোমবার স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মো. আবদুর রহমান স্বাক্ষরিত আরেকটি প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।
শেরপুর পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, আজ সোমবার প্রজ্ঞাপনের কপি ওয়েবসাইটে দেখে বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন তাঁরা।
বরখাস্ত হওয়ার পর প্রতিক্রিয়ায় ইমরোজ মুজিব প্রথম আলোকে বলেন, ৭ লাখ টাকা আত্মসাতের সঙ্গে তিনি জড়িত নন। তিনি দাবি করেন, তাঁর স্বাক্ষর জাল করে টাকা আত্মসাৎ করেছে অন্য কেউ। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে লিখিতভাবে জবাব দেবেন তিনি।
অন্যদিকে কাউন্সিলর ফিরোজ উদ্দীন আহমেদের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। এ কারণে তাঁর কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।