লক্ষ্মীপুরে যুবলীগ নেতা হত্যায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড, ১৪ জনের যাবজ্জীবন
লক্ষ্মীপুরে যুবলীগ নেতা মামুনুর রশীদ হত্যা মামলায় ৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১৪ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তদের ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সৈয়দা আমিনা ফারহিন এ রায় ঘোষণা করেন।
এ মামলায় মো. সোহেল ও গোলাম রাব্বী নামের দুজনকে বেকসুর খালাস দেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত একজন ও যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত একজন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিরা পলাতক।
নিহত মামুনুর রশীদ লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি ছিলেন। তিনি চন্দ্রগঞ্জের আমানীলক্ষ্মীপুর গ্রামের আবু তৈয়ব খানের ছেলে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন নোয়াখালী চাটখিল উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের সাব মিয়ার ছেলে মো. মধু (৩৫) ও তাঁর ভাই মো. শামীম (৪০), একই উপজেলার বারিয়াধর গ্রামের মো. বারেক মাস্টারের ছেলে মো. মামুন (৩৭), পূর্ব দেলিয়াই গ্রামের মৃত শাহজাহান চৌকিদারের ছেলে মো. বাবু এবং লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের পশ্চিম লতিফপুর গ্রামের বশির উল্যার ছেলে মো. কাউছার (২৭)।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ সূত্রে জানা যায়, রাজনীতিতে জড়িত থাকায় মামুনুর রশীদের সঙ্গে সোলায়মান উদ্দিন ওরফে জিসানের দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। জিসান বাহিনীর সদস্যরা মামুনুরকে হত্যার জন্য হুমকি দিতেন। জিসান র্যাবের হাতে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। এরপর জিসানের ছোট ভাই তুহিন সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রধান হয়ে এলাকায় অরাজকতা সৃষ্টি করে আসছিলেন। এ সন্ত্রাসী বাহিনীর লোকজনকে গ্রেপ্তারে পুলিশকে সহযোগিতা করেন মামুনুর ও পশ্চিম লতিফপুর গ্রামের ওমর ফারুক।
জিসান হত্যার ঘটনায়ও মামুনুর ও ওমর ফারুককে দায়ী করেন তুহিন। এ কারণে তুহিন তাঁর সহযোগীদের নিয়ে মামুনুর ও ফারুককে হত্যার পরিকল্পনা করেন। ২০১৫ সালের ১৮ মে রাতে মোটরসাইকেলযোগে মামুনুর চাটখিলের দেলিয়ার বাজার থেকে বাড়ির দিকে আসছিলেন। পথে তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয়। পরদিন মামুনুরের ভাই ফখরুল ইসলাম বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ১৪ থেকে ১৫ জনকে আসামি করে চন্দ্রগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন।
লক্ষ্মীপুর জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন বলেন, ২০১৬ সালের ১০ সেপ্টেম্বর ২১ আসামির নামে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। আদালত দীর্ঘ শুনানি শেষে আজ রায় দেন। রায়ের সময় আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মো. মধু ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জাহাঙ্গীর মো. টিপন উপস্থিত ছিলেন। অন্যরা পলাতক।