‘এই জাড়ে এরম একখান কম্বল খুব দরকার আছিল’
লাল চান্দের বয়স ১০০ ছুঁই ছুঁই। বয়সের ভারে কোনোরকমে চলাফেরা করেন। অন্যের কাছে হাত পেতে যা জুটে, তা দিয়েই চলতে হয় লাল চান্দকে। কিন্তু পেটের ক্ষুধা মেটে না। আজ মঙ্গলবার দুপুরে প্রথম আলো ট্রাস্টের কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে কম্বল নিতে এসেছিলেন এই বৃদ্ধ। একটা কম্বল গায়ে জড়িয়ে দিলে তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। ওই সময় তাঁর পরনে একটা ছেঁড়া জ্যাকেট ছিল। সেটি দেখিয়ে বললেন, ‘এডিত জাড় (শীত) যায় না। এই জাড়ে এরম একখান কম্বল খুব দরকার আছিল। আইজ পানু। কষ্টডা কমবি।’
প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে ও বন্ধুসভার সদস্যদের সহযোগিতায় আজ রাজশাহীর বাঘায় ২০০ দুস্থ, অসহায় ও শীতার্ত মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়। বাঘা উপজেলার দিঘা, পীরগাছা, ধন্দহ, বাউসা, খাগড়বাড়িয়া, দিঘা নওদাপাড়া ও নওটিকা গ্রামের মানুষের মধ্যে এসব কম্বল বিতরণ করা হয়।
দিঘা গ্রামের মোমেনা বেওয়ার বয়সও প্রায় ১০০ বছর। মোমেনা কম্বল হাতে পেয়ে বলেন, ‘আমার কপালডা কষ্টের। ছেলেরা কেউ দেখে না। একটা মিয়া (মেয়ে) আছে। মিয়াই টানে। মিয়ার দেওয়া এই চাদর গায়ে দিয়াই থাকি। আগে কেউ এরম কম্বল দেয়নি।’
দিঘা নওদাপাড়া গ্রামের প্রতিবন্ধী জুলেখা ও হাবিবুরকে দেখার কেউ নেই। এই শীতেও জুলেখার পরনে শুধু পুরোনো আটপৌরে শাড়ি আর হাবিবুরের গায়ে একটি ছেঁড়া জামা। কলেজশিক্ষক গোলাম তোফাজ্জল কবির তাঁদের দুজনকে একটি ভ্যানে করে নিয়ে এসেছিলেন। তাঁরা ভ্যানের ওপর বসে কম্বল হাতে নিয়ে শুধু ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রইলেন।
কম্বল বিতরণে সহযোগিতা করেন দিঘা কলেজের অধ্যক্ষ জহুরুল ইসলাম, শিক্ষক নুরুল ইসলাম, গোলাম তোফাজ্জল কবির, বুধিরহাট কলেজশিক্ষক নবাব আলী ও বন্ধুসভার বন্ধুরা।
দিঘা কলেজের অধ্যক্ষ জহুরুল ইসলাম শীতার্তদের উদ্দেশে বলেন, প্রথম আলো সংবাদপত্রের চেয়ে একটু বেশি কাজ করে থাকে। তাই রাজশাহী শহর থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে এই নিভৃত গ্রামের দুস্থ মানুষদের খুঁজে বের করে শীতবস্ত্র দিতে এসেছে। তিনি প্রথম আলোর অগ্রযাত্রা কামনা করেন।
শীতার্ত মানুষের সহযোগিতায় আপনিও এগিয়ে আসতে পারেন। সহায়তা পাঠানো যাবে ব্যাংক ও বিকাশের মাধ্যমে।
হিসাবের নাম: প্রথম আলো ট্রাস্ট/ ত্রাণ তহবিল
হিসাব নম্বর: ২০৭২০০১১১৯৪
ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, কারওয়ান বাজার শাখা, ঢাকা।
অথবা বিকাশে পেমেন্ট করতে পারেন: ০১৭১৩-০৬৭৫৭৬ এই মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট নম্বরে। বিকাশ অ্যাপে ডোনেশন অপশনের মাধ্যমেও আপনার অনুদান পাঠাতে পারেন।