ফরিদপুর মেডিকেলে ধাক্কা লাগাকে কেন্দ্র করে হামলা, চিকিৎসক আহত

ফরিদপুর মেডিকেলে হামলার শিকার চিকিৎসক শাহীন জোদ্দারকে উদ্ধার করে হাসপাতালের অস্ত্রোপচার কক্ষে নেওয়া হয়ছবি: প্রথম আলো

ধাক্কা লাগাকে কেন্দ্র করে বাগ্‌বিতণ্ডার জেরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. শাহীন জোদ্দারের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হাসপাতালের ১০ তলা ভবনের নিচতলায় এ ঘটনা ঘটে।

হামলায় চিকিৎসক শাহীন জোদ্দারের একটি দাঁত পড়ে গেছে। তাঁকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের অধ্যাপক আবদুল গণি আসানকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অন্যদিকে ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চিকিৎসক শাহীন জোদ্দার হাসপাতালের দায়িত্ব পালন শেষ করে ১০ তলা ভবনের তিনতলা থেকে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামছিলেন। এ সময় ফরিদপুরের বেসরকারি জেড এম নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থী ও শহরের পশ্চিম খাবাসপুর এলাকার বাসিন্দা মো. মোত্তাকিমের (২১) সঙ্গে তাঁর ধাক্কা লাগে। এ নিয়ে শাহীন জোদ্দারের সঙ্গে মোত্তাকিমের কথা–কাটাকাটি হয়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, শাহীন জোদ্দার হাসপাতালের দোতলা থেকে নিচে নেমে আসার পর মোত্তাকিম ও তাঁর সহযোগীরা তাঁর ওপর চড়াও হন। এ সময় শাহীন জোদ্দার ঘুষি মেরে হামলাকারীদের প্রতিহত করার চেষ্টা করলে হামলাকারীরা ঘুষি মেরে ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে তাঁকে আহত করেন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালের অস্ত্রোপচার কক্ষে নেওয়া হয়।

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ দিলরুবা জেবা প্রথম আলোকে বলেন, হামলায় শাহীন জোদ্দারের একটি দাঁত পড়ে গেছে। আরেকটি দাঁত মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শাহীন জোদ্দারকে প্রকাশ্যে মারধরের ভিডিও ফুটেজ আছে। এ ঘটনায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পক্ষ থেকে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপারসহ (এসপি) স্বাস্থ্য বিভাগকে লিখিতভাবে জানানো হবে।

দিলরুবা জেবা আরও বলেন, এ ঘটনায় আজ রাত নয়টায় হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকদের নিয়ে একটি জরুরি সভা আহ্বান করা হয়েছে। ওই সভায় এ ব্যাপারে পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে আমাদের চিকিৎসকেরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।’

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) শৈলেন চাকমা বলেন, নার্সিংপড়ুয়া এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা–কাটাকাটির জেরে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাননি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, হাসপাতালের নিরাপত্তা জোরদারে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।