তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যেও খোলা নওগাঁর প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়

তীব্র শীত উপেক্ষা করে বিদ্যালয়ে এসেছে শিক্ষার্থীরা। বুধবার সকালে নওগাঁর চক এনায়েত উচ্চবিদ্যালয়েছবি: প্রথম আলো

নওগাঁয় আজ বুধবার সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে থাকলে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখার কথা। কিন্তু নির্দেশনা না মেনে জেলার বিদ্যালয়গুলো খোলা রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, তাপমাত্রা কোনো দিন কমছে, আবার কোনো দিন বাড়ছে। এ কারণে তাঁরা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন। গতকাল মঙ্গলবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলেও সকালেই ঝলমলে রোদ উঠেছিল। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল, আজ তাপমাত্রা বাড়তে পারে। তাই আজ স্কুলে পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়নি।

লুৎফর রহমান আরও বলেন, আজকের তাপমাত্রা গতকালের মতো হলেও আজ শীত অনুভূত হচ্ছে বেশি। এখন হুট করে তো আর স্কুল বন্ধ দেওয়া যায় না। স্কুল বন্ধ করতে গেলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। তারপর সেখান থেকে নির্দেশনা এলে স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা যাবে।

নওগাঁর বদলগাছী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা যায়, আজ সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১০০ শতাংশ। নওগাঁ ছাড়াও পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম ও কিশোরগঞ্জে একই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার নওগাঁয় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

কনকনের শীতের মধ্যে বিদ্যালয়ে এসেছে শিশুশিক্ষার্থীরা। বুধবার সকালে খাস নওগাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে
ছবি: প্রথম আলো

মাঘের হাড়কাঁপানো শীতে নওগাঁয় এক সপ্তাহ ধরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ থেকে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। টানা পাঁচ দিনের মৃদু শৈত্যপ্রবাহে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। অধিকাংশ বিদ্যালয়ে কমেছে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি। পরিস্থিতি বিবেচনায় গত সোম ও গতকাল মঙ্গলবার জেলার সব প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখা হয়েছিল। তবে আজ তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে থাকলেও বন্ধ রাখা হয়নি জেলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো।

আজ সকালে নওগাঁ শহরের কয়েকটি বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় খোলা আছে। তীব্র শীত উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে এসেছে।

নওগাঁ কৃষ্ণধন (কেডি) সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক হাসমত আলী বলেন, ‘গতকাল সকালেই রোদ উঠেছিল। মনে করেছিলাম, আজও আবহাওয়া ভালো থাকবে। কিন্তু আজ সকাল ১০টা বাজলেও এখনো সূর্যের দেখা নেই। কনকনে শীত আর কুয়াশার মধ্যে বিদ্যালয় খোলা থাকলেও অধিকাংশ শিক্ষার্থীই বিদ্যালয়ে আসেনি। তীব্র শীতের কারণে অনেক অভিভাবকই স্কুল বন্ধ রাখার জন্য অনুরোধ করছেন। কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা না পেলে স্কুল তো বন্ধ রাখা যায় না।’

বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক সাথী আখতার বলেন, ‘আমার মেয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। স্কুল খোলা থাকলে আর বাচ্চা স্কুলে না এলে পড়াশোনায় অন্যদের চেয়ে পিছিয়ে যাবে। তাই বাধ্য হয়ে কনকনে ঠান্ডার মধ্যেই বাচ্চাকে স্কুলে আনতে হচ্ছে। তবে আমার মতে শীতের কারণে কয়েকটা দিন স্কুল বন্ধ রাখাই ভালো। করোনার সময় তো মাসের পর মাস স্কুল বন্ধ ছিল।’