আ.লীগের নেতা ও চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে শিক্ষককে পেটানোর অভিযোগ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলায় আওয়ামী লীগের এক নেতা ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অহেদুজ্জামান নামের এক মাদ্রাসাশিক্ষককে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে।
অহেদুজ্জামান উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়ন কাশিয়াবাড়ি আলিম মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক। তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অভিযুক্ত দুজন হলেন বোয়ালিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি শামিউল ইসলাম এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও মাদ্রাসা কমিটির সদস্য গোলাম মোহাম্মদ।
এ ঘটনায় গতকাল রোববার রাতে শিক্ষক অহেদুজ্জামানের স্ত্রী ও ওই মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক সাবিহা খাতুন গোমস্তাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।
গোমস্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, থানার একজন উপপরিদর্শককে (এসআই) তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযোগের বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান শামিউল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইসলামি জলসায় সংসদ সদস্যকে প্রধান অতিথি হিসেবে নিয়ে আসতে পারবেন কি, তিনি তো তখন থাকবেন না—এ কথা বলতেই অহেদুজ্জামান উত্তেজিত হয়ে আমাকে ও গোলাম মোহাম্মদকে গালিগালাজ শুরু করেন। সভায় উপস্থিত অন্য সদস্যরা তাঁকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে বাইরে বের নিয়ে যাওয়ার সময় মেঝেতে পড়ে গিয়ে জ্ঞান হারানোর ভান করেন তিনি।’
শামিউল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ‘অহেদুজ্জামানের এনজিওর মাধ্যমে অনেকে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ক্ষুব্ধ কয়েকজন তাঁকে (অহেদুজ্জামানকে) মারধর করেন। আমি তাঁকে স্পর্শও করিনি।’
অভিযুক্ত গোলাম মোহাম্মদও মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘তদন্তে যদি প্রমাণিত হয়, আমি তাঁকে (অহেদুজ্জামান) মেরেছি, তবে যে শাস্তি দেওয়া হবে মাথা পেতে নেব।’
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, গত শনিবার বিকেলে মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সভায় শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অহেদুজ্জামান। তিনি মাদ্রাসা মাঠে অনুষ্ঠিতব্য ইসলামি জলসায় প্রধান অতিথি ও মাদ্রাসার নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যুক্ত করার জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য মু. জিয়াউর রহমানের নাম প্রস্তাব করেন। এতে শামিউল ইসলাম, গোলাম মোহাম্মদ ও তাঁদের সহযোগীরা মাদ্রাসাশিক্ষক অহেদুজ্জামান দেওয়ালে ঠেসে ধরে বেধড়ক মারধর করেন।
পরে বাইরে এনে মেঝেতে ফেলে আবারও মারধর করা হয় তাঁকে। এতে রক্তাক্ত হয়ে জ্ঞান হারান তিনি। উদ্ধার করে তাঁকে প্রথমে গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।