ধর্ষণের শিকার শিশুটি হাসপাতালে কাতরাচ্ছে, শনাক্ত হয়নি অভিযুক্ত

ধর্ষণপ্রতীকী ছবি

ময়মনসিংহের ভালুকায় সাত বছর বয়সী একটি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে বাসার পাশে মাঠে খেলতে গেলে তাকে ধর্ষণ করে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি। পরে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। রাত ৯টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একটি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয় তাকে।

আজ বৃহস্পতিবার শিশুটিকে রক্ত দিতে ছোটাছুটি করছিলেন স্বজনেরা। অভিযুক্তকে চিনতে পারেনি শিশুটি। আজ বেলা একটা পর্যন্ত কাউকে শনাক্ত কিংবা গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

স্বজনেরা জানান, শিশুটির বাড়ি নেত্রকোনার একটি উপজেলায় হলেও তার বাবা ভালুকায় থেকে রাজমিস্ত্রির শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। তিন মাস আগে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে তিনি ভালুকায় আসেন। তিন ভাই–বোনের মধ্যে সবার বড় সাত বছরের শিশুটি। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আরও কয়েকটি শিশুর সঙ্গে বাসার পাশে একটি মাঠে খেলতে যায়। তখন অন্য শিশুদের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়ে শিশুটিকে আটকে রেখে ধর্ষণ করেন অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি। বেলা আড়াইটার দিকে বাসায় গেলে শিশুটির মা রক্তক্ষরণ হওয়ার বিষয়টি দেখতে পান। তখন শিশুটি নির্যাতনের বর্ণনা দেয়। অভিযুক্তের বর্ণনা হিসেবে লোকটি বয়স্ক বলে বোঝা যায়। পরে স্বজন ও স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযুক্তের সন্ধানও করেন। কিন্তু কাউকে পাওয়া যায়নি।

পরে শিশুটিকে বিকেলে ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান চিকিৎসকেরা। পাশাপাশি ঘটনাটি পুলিশকে জানাতে বলেন। পরে শিশুটিকে নিয়ে স্বজনেরা ভালুকা থানায় গিয়ে ঘটনার বিস্তারিত জানান। গতকাল রাত ৯টার দিকে শিশুটিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের একটি ওয়ার্ডে শিশুটি চিকিৎসা নিচ্ছে। আজ বেলা একটার দিকে শিশুটির শরীরে স্যালাইন চলছিল।

শিশুটির মা প্রথম আলোকে বলেন, ‘অভাবের কারণে বাড়ি ছেড়ে এসে আমার সর্বনাশ হয়ে গেল। বাসা থেকে খেলতে গিয়ে আমার মেয়ে ধর্ষণের শিকার হলো। আমাদের আর্থিক সামর্থ্যও কম। ভালো চিকিৎসা দরকার মেয়ের।’

শিশুটির সঙ্গে থাকা এক স্বজন বলেন, চিকিৎসক জানিয়েছেন রক্ত লাগবে। তাই এলাকা থেকে দুজন লোক নিয়ে এসেছেন। আজই শরীরে রক্ত দিতে হবে।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ মাইনউদ্দিন খান বলেন, ধর্ষণের শিকার শিশুটির রক্তক্ষরণ হচ্ছে। তার শরীরে রক্ত দিতে হবে। প্রস্তুতি চলছে। শিশুটিকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। শিশুটির অবস্থা এখনো শঙ্কামুক্ত নয়।

ভালুকা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামছুল হুদা প্রথম আলোকে বলেন, শিশুটিকে থানায় আনার পর মনে হয়েছে, শিশুটির পরিবার দরিদ্র হওয়ায় অর্থসহায়তা দিয়ে চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। অভিযুক্তকে সঠিকভাবে চিনতে পারেনি শিশুটি। পুলিশের একটি দল সার্বক্ষণিকভাবে কাজ করছে। গোয়েন্দা তৎপরতাও বাড়ানো হয়েছে। শিশুটির সঙ্গে যে ব্যক্তি ঘটনাটি ঘটিয়েছে, তাকে শনাক্তের কাজ চলছে। তবে আজ দুপুর পর্যন্ত অভিযুক্তকে শনাক্ত করা যায়নি।