নির্বাচিত হলে জাফর উল্যাহ পানামা ব্যাংকে টাকা পাচার করবেন: নিক্সন চৌধুরী
ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন চৌধুরী এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী জাফর উল্যাহর তীব্র সমালোচনা করেছেন। গতকাল শুক্রবার রাতে সদরপুর উপজেলার ঢেউখালী ইউনিয়নে ওয়াজিবুল্লাহ্ হাওলাদারডাঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ‘উঠান বৈঠক ও আলোচনা সভা’ অনুষ্ঠানে সমালোচনা করেন তিনি।
এর আগে ২৫ অক্টোবর সকালে ভাঙ্গা উপজেলার মানিকদহ ইউনিয়নের ফাজিলপুর গ্রামে এক উঠান বৈঠকে কাজী জাফর উল্যাহ বলেছিলেন, ‘নিক্সন নিজেকে সিংহ মনে করেন। তাঁকে আবার ভোট দিলে আপনাদের চাবাইয়া খাইয়া ফেলবে।’ এর জবাবে নিক্সন চৌধুরী গতকাল বলেন, ‘আমি কারও মাথা চাবাইয়া খাই না। আপনি নির্বাচিত হলে জনগণের টাকা লুট করে পানামা ব্যাংকে পাচার করবেন।’ তিনি কাজী জাফর উল্যাহকে ‘রাজাকার’ ও ‘মোস্তাকের প্রেতাত্মা’ বলেন।
ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন উপজেলা নিয়ে গঠিত ফরিদপুর-৪ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য নিক্সন চৌধুরী। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কাজী জাফর উল্যাহকে পরাজিত করে দুই দফায় সংসদ সদস্য হন নিক্সন চৌধুরী।
নিক্সন চৌধুরী বলেন, ‘আমার কাজের মধ্য দিয়ে আগের এমপির দাম্ভিকতা, অহংকার আমি শেষ করে দিয়েছি।’ জমি দখলের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি নাকি ১ হাজার ১০০ বিঘা জমি দখল করেছি। ১ হাজার ১০০ বিঘা জমি কয় শতাংশে হয়, তা কি উনি জানেন? উনি ওনার নিজের বাগানবাড়িতে মানুষের জমি দখল করে ওয়াল দিয়েছেন, সেটাই স্বপ্নে দেখে ভাবেন আমার কথা।’
নিক্সন চৌধুরী উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে বলেন, ‘দীর্ঘ ৪০ বছর ভাঙ্গা শাসন করেছে কাজী পরিবার। ছয়বার ওনারা এমপি হইছেন। আওয়ামী লীগ একটানা তিনবার ক্ষমতায়। উনি বাংলাদেশের চার থেকে পাঁচজন দুর্নীতিতে সেরাদের মধ্যে একজন। পানামা কেলেঙ্কারি, বিদেশি ব্যাংকে টাকা পাচার করার তালিকায় ওনার পরিবারের চারজনের নাম আছে। ওনার এত টাকা যে বাংলাদেশের ব্যাংকে জায়গা হয় না, বিদেশে পাচার করতে হয়। একটা প্রশ্ন, তিনি এই তিন উপজেলার জন্য কী করেছেন?’
নিক্সন চৌধুরী বলেন, তিনি এবার নৌকায় নির্বাচন করার সুযোগ চাইবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার কাছে। নৌকা না পেলেও তিনি নির্বাচন করবেন। তাঁর জয়ী করতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। ‘ছেলে’ হিসেবে কাজী জাফর উল্যাহকে পরামর্শ দিয়ে নিক্সন চৌধুরী বলেন, ‘আমি ছেলে হিসেবে একটা উপদেশ দেব—কাকা, নৌকাটাকে আর অপমান কাইরেন না। নৌকা আমাদের হৃদয়ে, নৌকা আমাদের অহংকার, নৌকা স্বাধীনতার প্রতীক; এটারে আর অপমান কইরেন না। ভণ্ডামি বন্ধ কইরা, নিজের কামাই করা টাকা নিয়া ভালো থাকেন।’
সভায় সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় বাসিন্দা মো. ফিরোহ হাওলাদার। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ফরিদপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহদাৎ হোসেন, সদরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী শফিকুর রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা শায়েদীদ গামাল প্রমুখ।