এবার পাগলা মসজিদের দান সিন্দুকে মিলল ১৫ বস্তা টাকা, গণনা চলছে
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দান সিন্দুকে এবার ১৫ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে। ২ মাস ২৯ দিন পর আজ শনিবার সকালে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও দানবাক্স খোলা কমিটির আহ্বায়ক এ টি এম ফরহাদ চৌধুরীর নেতৃত্বে মসজিদ কমিটির উপস্থিতিতে আটটি সিন্দুক খোলা হয়। এখন চলছে গণনার কাজ। টাকা ছাড়াও দান সিন্দুকে বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকার পাওয়া গেছে।
এর আগে ২ জুলাই পাগলা মসজিদের দান সিন্দুকে সাড়ে ১৬ বস্তায় মোট ৩ কোটি ৬০ লাখ ২৭ হাজার ৪১৫ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। এ ছাড়া স্বর্ণালংকার ও বৈদেশিক মুদ্রা পাওয়া গিয়েছিল। গত বছরের তুলনায় এবার কম সময়ের ব্যবধানে দান সিন্দুক খোলা হয়।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ সকাল আটটায় জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মসজিদের আটটি সিন্দুক খোলা হয়। সিন্দুকে পাওয়া টাকাগুলো প্রথমে বস্তায় ভরা হয়। এরপর সেগুলো মেঝেতে ঢেলে গণনার কাজ শুরু করা হয়।
মসজিদ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম প্রথম আলোকে বলেন, পাগলা মসজিদের দানের টাকায় আন্তর্জাতিক মানের একটি ইসলামি কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে। কমপ্লেক্সটি এশিয়া মহাদেশের মধ্যে অন্যতম স্থাপত্য হিসেবে বানানো হবে। এতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রাকৃতিক আলোর ব্যবস্থা থাকবে। এ জন্য আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৫ থেকে ১২০ কোটি টাকা। সেখানে একসঙ্গে প্রায় ৩৫ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। এ ছাড়া পাঁচ হাজার নারীর জন্য নামাজের আলাদা ব্যবস্থা থাকবে।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, পাগলা মসজিদ নিয়ে অনেকে প্রতারণার সুযোগ নিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ জন্য তিনি সবাইকে মসজিদের সিন্দুকে সরাসরি দানের আহ্বান জানান। মসজিদের পক্ষ থেকে বিকাশ, নগদ বা ব্যাংক হিসাবে টাকা নেওয়া হয় না। এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে মসজিদ প্রাঙ্গণে নোটিশ টাঙানো হয়েছে। এবার গণনা শেষে যে টাকা পাওয়া যাবে, তা রূপালী ব্যাংকে জমা করা হবে।
জেলা প্রশাসনের কয়েকজন ম্যাজিস্ট্রেটসহ পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শওকত উদ্দীন ভূঞা, মসজিদের ইমাম মুফতি খলিলুর রহমান, রূপালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. রফিকুল ইসলাম টাকা গণনার কাজ তদারক করছেন। গণনায় সহযোগিতা করছে মাদ্রাসার শতাধিক খুদে শিক্ষার্থী।
কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে পাগলা মসজিদ অন্যতম একটি প্রতিষ্ঠান। শহরের পশ্চিমে হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে মসজিদটি গড়ে ওঠে। কথিত আছে, খাস নিয়তে এ মসজিদে দান করলে মানুষের মনের আশা পূরণ হয়। সে জন্য দূরদূরান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ এখানে এসে দান করে থাকেন। মানুষ টাকাপয়সা ছাড়াও স্বর্ণালংকার দান করেন। এ ছাড়া গবাদিপশু, হাঁস-মুরগিসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্রও মসজিদটিতে দান করা হয়।