সিলেট সরকারি ভেটেরিনারি কলেজ একটি অনুষদ নিয়ে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে ১৯৯৫ সালে যাত্রা শুরু করে। পরে ২০০৬ সালের ২ নভেম্বর এই কলেজ সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে কৃষিবিষয়ক শিক্ষা ও গবেষণায় প্রতিষ্ঠানটি ধারাবাহিকভাবে নানা সাফল্য অর্জন করে চলেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট জায়গা হচ্ছে ৬২ দশমিক ২৯ একর। এখানে ৭টি অনুষদের অধীন ৪৭টি বিভাগ আছে। শিক্ষার্থীদের আবাসনের জন্য হল আছে সাতটি। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩ হাজার শিক্ষার্থী ও ২৭৭ জন শিক্ষক আছেন।
প্রথম আলো: নবীন হলেও সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা-গবেষণায় নজর কেড়েছে। এ বিষয়ে কী বলবেন আপনি?
উপাচার্য: নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আসলেই অনেক দূর এগিয়েছে। অসংখ্য সাফল্যের কথা উদাহরণ হিসেবে বলা যাবে। মূলত কৃষিবিষয়ক শিক্ষা ও গবেষণায় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম এখন সারা দেশেই তৈরি হয়েছে।
প্রথম আলো: সিলেটে উচ্চশিক্ষার মান কেমন?
উপাচার্য: সিলেটে একসময় উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বলতে মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজকেই বোঝাত। বর্তমানে কিন্তু উচ্চশিক্ষার জন্য আরও অনেক প্রতিষ্ঠান আছে। সিলেটে পাঁচটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজসহ বেশ কিছু প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় আছে। শিক্ষার মানের বিষয়ে সব প্রতিষ্ঠানের খবর আমার জানা নেই। তবে যত দূর জানি, অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজের গ্র্যাজুয়েটরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নিজেদের সক্ষমতার স্বাক্ষর রাখছেন।
প্রথম আলো: শিক্ষার মান উন্নয়ন ও গবেষণা নিয়ে কী কী উদ্যোগ আছে?
উপাচার্য: শিক্ষার মান উন্নয়ন ও গবেষণা নিয়ে বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। গবেষণার সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ৩০টির বেশি ল্যাবরেটরি আধুনিকায়ন করা হয়েছে। প্রতিটি ল্যাবে গড়ে ৩০ লাখ টাকার আধুনিক যন্ত্রপাতি কেনা হয়েছে। আরও চারটি ল্যাবরেটরি আধুনিকায়নের প্রক্রিয়া চলমান। আমি উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছি প্রায় চার মাস আগে। এ সময়ের মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ছয়টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছি। এমনভাবে একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রণয়ন করা হয়েছে, যাতে শিক্ষার্থীরা সঠিক সময়ে পড়ালেখা শেষ করতে পারেন। এ ছাড়া গবেষক ও শিক্ষকদের পুরস্কার এবং শিক্ষার্থীদের ভালো ফলের জন্য পুরস্কার প্রদানের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
নান্দনিক নির্মাণশৈলীতে তৈরি সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার। ছবি: প্রথম আলো
প্রথম আলো: বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নে কোনো উদ্যোগ আছে কি?
উপাচার্য: ১০ বছর ধরে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো প্রকল্প অনুমোদিত হয়নি। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই জরুরি ভিত্তিতে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা, অভ্যন্তরীণ যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন ও গবেষণার অবকাঠামো বাড়ানোর জন্য ২৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প তৈরি করে জমা দিয়েছি। এ প্রকল্প বর্তমানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। এর আগে জমা দেওয়া আরও দুটি প্রকল্প বর্তমানে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। এসব প্রকল্প অনুমোদিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা এবং অবকাঠামোগত অনেক উন্নয়ন হবে।
প্রথম আলো: ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী এবং আপনার মেয়াদকালের মধ্যে কীভাবে এ প্রতিষ্ঠানকে অগ্রসর দেখতে চান?
উপাচার্য: স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার উপযোগী দক্ষ গ্র্যাজুয়েট তৈরির কারখানাতে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়কে পরিণত করতে চাই। আন্তর্জাতিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়কে পরিচিত করতে চাই। আমার মেয়াদ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়কে দেশের প্রথম সারির পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হিসেবে দেখতে চাই।