কেরানীগঞ্জে ‘গ্যাসের গন্ধে’ আতঙ্ক, তিতাসের ব্যবস্থাপক বললেন ‘অফিস টাইমে কল করেন’

তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশনছবি: সংগৃহীত

ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকায় আজ বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে ‘গ্যাসের গন্ধ’ ছড়িয়ে পড়ার কথা জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ বিষয়ে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো সাড়া পাননি তাঁরা। এতে স্থানীয় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে কেরানীগঞ্জের জিনজিরা, কদমতলী, কেরানীগঞ্জ মডেল টাউন আবাসিক এলাকা, মডেল থানা রোড, মান্দাইল, আগানগর, কালীগঞ্জ, চরকালীগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় ‘গ্যাসের গন্ধ’ ছড়িয়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। এসব এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, তিতাসের কেরানীগঞ্জ জোন কার্যালয়ের যোগাযোগের নম্বরে ফোন করেও তাঁরা কোনো সাড়া পাননি।

এ বিষয়ে আজ সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশনের কেরানীগঞ্জ জোনের ব্যবস্থাপক (বিপণন আবাসিক) নাজির হোসেনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এখন কি কল করার সময়? এখন কল করেছেন কেন?’ এ সময় এই প্রতিবেদক পরিচয় জানিয়ে গ্যাসের গন্ধ ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখন কিছু বলতে পারব না। অফিস টাইমে কল করবেন।’ এরপর তিনি মুঠোফোন সংযোগ কেটে দেন।

আগানগর এলাকার গৃহবধূ শায়লা বেগম বলেন, ‘বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ছড়িয়ে পড়া গ্যাসের গন্ধ পাই। তখন ভেবেছি, আমাদের রান্না ঘরের গ্যাস সিলিন্ডার থেকে গন্ধ বের হচ্ছে। তখন গ্যাস সিলিন্ডারটি যাচাই করে দেখি, সিলিন্ডারটি ঠিক আছে। কিন্তু তা–ও গ্যাসের গন্ধ দূর হচ্ছে না। এতে আমি ভয় পেয়ে যাই।’ তিনি আরও বলেন, ‘কিছুক্ষণ পর আমাদের এক প্রতিবেশী এসে গ্যাসের গন্ধ ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি জানান। পরে জানতে পারি, আশপাশের এলাকাতেও গ্যাসের গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে।’

কেরানীগঞ্জ মডেল টাউন এলাকার বাসিন্দা ফয়সাল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ বিকেল চারটা থেকে গ্যাসের উৎকট গন্ধ আমাদের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় আমরাসহ আশপাশের বাসিন্দারা বাইরে বেরিয়ে পড়ি। তখন সেখানেও গ্যাসের গন্ধ পাই। এতে আমরা ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়ি।’ তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে জানতে তিতাস গ্যাসের কেরানীগঞ্জ কার্যালয়ের নম্বরে যোগাযোগ করেও কোনো সাড়া পাননি। পরবর্তী সময়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি জানার চেষ্টা করেছেন।

শুভাঢ্যা ইউনিয়নের কালীগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা কায়েস হোসেন বলেন, ‘এলাকায় গ্যাসের গন্ধ ছড়িয়ে পড়ার পর ৯৯৯ নম্বরে কল করে বিষয়টি জানাই। তারা আমাকে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। বিষয়টি জানাতে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার কল করলেও তারা মুঠোফোন ধরেনি।’

জিনজিরা বাসরোড এলাকার বাসিন্দা নাসির উদ্দিন বলেন, তিতাস গ্যাসের কেরানীগঞ্জ কার্যালয়ে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও কেউ মুঠোফোন ধরেননি। এভাবে জনগণকে হয়রানি ও আতঙ্কিত করার কোনো অর্থ হয় না। তিতাস গ্যাসের কোনো কারিগরি ত্রুটি থাকলে সেটি আগে থেকে জানানো উচিত ছিল।