পাহাড়ের কঠিন চীবরদান অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা ভিক্ষু সংঘের
পার্বত্য চট্টগ্রামের বিদ্যমান পরিস্থিতি ও নিরাপত্তাহীনতার কারণ দেখিয়ে এ বছর পার্বত্য চট্টগ্রামে (রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান) বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব কঠিন চীবরদান উদ্যাপন না করার ঘোষণা দিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্মিলিত ভিক্ষু সংঘ। আজ রোববার দুপুরে রাঙামাটি শহরের মৈত্রী বৌদ্ধ বিহারের দেশনালয়ে (ধর্ম উপদেশ কক্ষে) এ ঘোষণা দেওয়া হয়। আগামী নভেম্বর মাসে প্রথম সপ্তাহ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে মাসব্যাপী বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব কঠিন চীবরদান অনুষ্ঠিত হওয়া কথা।
বেলা দেড়টার দিকে পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্মিলিত ভিক্ষু সংঘের উদ্যোগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পার্বত্য ভিক্ষু সংঘের সভাপতি শ্রদ্ধালঙ্কার মহাথের। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বন ভান্তের শিষ্য সংঘের সহসভাপতি সৌর জগৎ মহাথের, সাধারণ সম্পাদক তেজপ্রিয় মহাথের, পার্বত্য ভিক্ষু পরিষদ বান্দরবানের সহসভাপতি জ্ঞানবংশ মহাথের, ত্রিরত্ন ভিক্ষু অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আগ্নাশ্রী মহাথের প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় পাহাড়ে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এযাবৎ যত সাম্প্রদায়িক হামলা হয়েছে, তার কোনোটির বিচার হয়নি। এসব ঘটনায় নামমাত্র তদন্ত কমিটি করা হয়, যা আলোর মুখ দেখে না। প্রশাসনের প্রতি কোনো আস্থা না থাকার পাশাপাশি বৌদ্ধ সমাজ ও ভিক্ষু সংঘ উদ্বিগ্ন। এমন নিরাপত্তাহীনতা ও অনিশ্চয়তার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামের সব বিহারে কঠিন চীবরদান না করার ঘোষণা দেন পার্বত্য ভিক্ষু সংঘের সভাপতি শ্রদ্ধালঙ্কার মহাথের।
সংবাদ সম্মেলনে শ্রদ্ধালঙ্কার মহাথের লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ১৮ থেকে ২০ সেপ্টেম্বর ও ১ অক্টোবর খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় শতাধিক দোকানপাট ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয় এবং হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। সহিংস ঘটনায় চারজন পাহাড়ির মৃত্যু হয়। এ সময় বিভিন্ন বৌদ্ধমন্দিরে বুদ্ধমূর্তি ভাঙচুর ও দানবাক্স লুট করা হয়।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. মোশারফ হোসেন খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বৌদ্ধ ভিক্ষুদের কঠিন চীবরদান উৎসব পালন না করার বিষয়টি শুনেছি। আগামীকাল সোমবার তাঁদের নিয়ে জেলা প্রশাসনের বৈঠকে বসার কথা রয়েছে। সেখানে তাঁরা কী বলেন, তা শুনব। আমাদের মতে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’