বাবা-ছেলেকে বাড়ির উঠানে কুপিয়ে হত্যার ২৫ বছর পর আদালতে মামলা

মামলাপ্রতীকী ছবি

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার রায়সা খাসকররা গ্রামে ২৫ বছর আগে রহিম বকস ও তাঁর ছেলে শফিউল ইসলাম খুনের ঘটনায় আদালতে মামলা হয়েছে। নিহত শফিউল ইসলামের ছেলে এস এ হৃদয় বাদী হয়ে আজ বৃহস্পতিবার আলমডাঙ্গা থানা আমলী আদালতে দুজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করে মামলাটি করেন। আসামিরা চরমপন্থী দলের সদস্য বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

বাদীপক্ষের আইনজীবী খন্দকার অহিদুল আলম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট লাভলী নাজনীন বাদীর লিখিত অভিযোগ আমলে নেন। অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে সাক্ষীদের জবানবন্দী লিখিতভাবে রেকর্ড করে আগামী ২৬ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

মামলার আসামি হিসেবে নাম উল্লেখ করা দুজন হলেন আলমডাঙ্গা উপজেলার মধুপুর গ্রামের মো. বাবলুর রহমান ও খেজুরতলা গ্রামের মো. মুঞ্জুর আলী। ১৯৯৯ সালের ১৬ জানুয়ারি এই জোড়া খুনের ঘটনা ঘটে।

মামলার বর্ণনায় বাদী উল্লেখ করেছেন, আসামিরা এলাকার চরমপন্থীদলের সদস্য। শফিউল ইসলাম ছিলেন রায়সা জামে মসজিদের ইমাম এবং তাঁর বাবা রহিম বকস প্রামাণিক এলাকার ধনাঢ্য ও সামাজিক ব্যক্তিত্ব ছিলেন। এজাহারনামীয় দুই আসামি ঘটনার কয়েক মাস আগে বাবা–ছেলের কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আসামিরা ১৯৯৯ সালের ১৬ জানুয়ারি রাতে তারাবিহর নামাজের ইমামতি করা অবস্থায় সেখান থেকে টেনেহিঁচড়ে বাড়িতে নিয়ে আসে এবং হাত-পা বেঁধে ফেলে। এরপর এজাহারনামীয় দুই আসামি শফিউলকে বাড়ির উঠানেই রামদা দিয়ে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে। ওই সময় রহিম বকস এগিয়ে এলে তাঁকেও গলা কেটে হত্যা করে। এরপর সব আসামি অবৈধ বন্দুক থেকে ফাঁকা গুলি করতে করতে ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। যা নিয়ে ওই সময় স্থানীয় ও জাতীয় সংবাদপত্রে খবর প্রকাশিত হয়।

২৫ বছর পর মামলা করার প্রসঙ্গে বাদী এস এ হৃদয় উল্লেখ করেছেন, পরিবেশ অনুকূলে না থাকায় বাদী এবং তাঁর পরিবারের লোকজন এত দিন মামলা করতে সাহস পাননি। বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে দেশে সেনাবাহিনী নিয়োজিত থাকায় বাদী বিচারের আশায় মামলা করছেন। বাদী নিরাপত্তাহীনতায় ভোগার কারণে মামলা করতে বিলম্ব হলো।