মুন্সিগঞ্জে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ, পেটাল এলাকাবাসী, উদ্ধার করল পুলিশ
চতুর্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে (১০) ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মুন্সিগঞ্জ শহরে সরকারি একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরীকে পিটুনি দিয়েছে স্থানীয় জনতা। পরে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেছে। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে তাঁকে পিটুনি দেওয়া হয়।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে মহড়ায় অংশ নিতে গতকাল সোমবার সহপাঠীদের সঙ্গে বিদ্যালয়ে গিয়েছিল ওই শিক্ষার্থী। তাকে একা পেয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন নৈশপ্রহরী। এ সময় শিশুটি চিৎকার দিলে কয়েকজন সহপাঠী চলে এলে তাকে ছেড়ে দেন নৈশপ্রহরী। মেয়েটি বাড়িতে গিয়ে রাতে মাকে ঘটনাটি জানায়।
এরপর আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে শিশুটির মা পরিবারের অন্য লোকজনসহ বিদ্যালয়ে এসে প্রধান শিক্ষকের কাছে অভিযোগ জানান। স্থানীয় লোকজন ঘটনাটি জানতে পেরে বিদ্যালয়ে জড়ো হতে থাকেন। একপর্যায়ে নৈশপ্রহরীকে শ্রেণিকক্ষের ভেতর আটকে পিটুনি দেন। পরে পুলিশকে বিষয়টি জানানো হলে নৈশপ্রহরীকে উদ্ধার করে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শৈবাল বসাক প্রথম আলোকে বলেন, বেলা পৌনে একটার দিকে অভিযুক্ত ওই ব্যক্তিকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। ওই ব্যক্তির শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারধরের চিহ্ন রয়েছে। তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে উত্তেজিত জনতা হাসপাতালেও চলে আসেন। তাঁরা হাসপাতালের মূল ফটকে, হাসপাতালের ভেতরে অবস্থান নিতে থাকেন। হাসপাতাল থেকে নৈশপ্রহরীকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা হাসপাতালে আসেন। নৈশপ্রহরীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হেফাজতে ঢাকায় নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। তবে মূল ফটকের সামনে আবারও উত্তেজিত জনতা জড়ো হয়ে তাঁকে গাড়ি থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এর পর থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিরাপত্তার মধ্যে রাখা হয়েছে।
মুন্সিগঞ্জ সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সজীব দে আজ বিকেল চারটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, দুপুর ১২টার দিকে এলাকাবাসীর হাত থেকে নৈশপ্রহরীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে আনা হয়। তখন থেকে উত্তেজিত জনতা তাঁকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। হাসপাতাল ঘিরে রেখেছে উত্তেজিত জনতা। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা জনতাকে বোঝানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিশুটির পরিবার থেকে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি।
শিশুশিক্ষার্থীর বড় ভাই বলেন, ‘২৬ মার্চ উপলক্ষে কুচকাওয়াজের মহড়া করার জন্য আমার বোন সোমবার সকালে স্কুলে যায়। ওই সময় আমার বোনকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন নৈশপ্রহরী। এরপর আমার বোন বাড়িতে চলে আসে। আমার বোন সম্পূর্ণ ঘটনাটি আমাদের জানায়। আমরা নৈশপ্রহরীর বিচার চাই।’