নড়াইল থেকে ট্রলারে খুলনার পথে বিএনপির নেতা-কর্মীরা

নড়াইল জেলার মানচিত্র

খুলনায় বিএনপির গণসমাবেশের আগে নড়াইলের তিন উপজেলা থেকে খুলনাগামী বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। তাই সামবেশে যোগ দিতে বিকল্প পথে খুলনায় যাচ্ছেন বিএনপির নেতা–কর্মীরা। এর মধ্যে অনেকে ট্রলারে, আবার অনেকে ইজিবাইক বা মোটরসাইকেলে ভেঙে ভেঙে খুলনায় যাচ্ছেন।

আজ শুক্রবার ভোর থেকে নড়াইল সদর, লোহাগড়া ও কালিয়া—তিন উপজেলা থেকে খুলনাগামী কোনো বাস ছেড়ে যায়নি বলে জানা গেছে। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার নড়াইল থেকে খুলনাগামী বাস চলাচল অনেকটাই স্বাভাবিক ছিল। এতে নড়াইলের অনেক নেতা–কর্মী গতকালই খুলনায় পৌঁছে গেছেন।

জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক টিপু সুলতান প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল সকালে বাস চালু থাকায় অনেক নেতা-কর্মী আগেই খুলনায় অবস্থান নিয়েছেন। তবে এখন বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কালিয়া ও লোহাগড়া থেকে নেতা–কর্মীরা ট্রলারে খুলনা যাচ্ছেন। এ ছাড়া নড়াইল সদর উপজেলার নেতা-কর্মীরা অটোরিকশা, ইজিবাইক ও মোটরসাইকেলে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।

বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ সকাল থেকে মধুমতি ও নবগঙ্গা নদীর বিভিন্ন ঘাট থেকে কালিয়া ও লোহাগড়ার নেতা-কর্মীরা ট্রলার ভাড়া করে খুলনায় যাচ্ছেন। এর আগে গতকাল বিকেলে অনেক নেতা–কর্মীকে নদীপথে খুলনায় যেতে দেখা গেছে। প্রতিটি ট্রলারে ১০ থেকে ১৫ জন নেতা–কর্মী উঠছেন। কালিয়ার উত্তর পাশ থেকে খুলনায় পৌঁছাতে প্রায় তিন ঘণ্টা সময় লাগছে। এদিকে লোহাগড়া থেকে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা সময় লাগছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা।

নড়াইল জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শাহরিয়ার রিজভী প্রথম আলোকে বলেন, বাস বন্ধ করে মহাসমাবেশে যাওয়া ঠেকানো যাবে না। বাস চালু থাকলে যাঁরা মহাসমাবেশে যেতেন, তাঁরা বিকল্প পথেও সমাবেশে যাবেন। ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরাও যাচ্ছেন। নড়াইল জেলা থেকে ১০ হাজার নেতা-কর্মী সমাবেশে পৌঁছাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার অনেকে পৌঁছে গেছেন। আজ ও কাল সকালের মধ্যে অন্যরা পৌঁছাবেন।

বাস বন্ধে যাত্রীরা দুর্ভোগে

হঠাৎ বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় সাধারণ যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছেন। বাস না পেয়ে অটোরিকশা, টেম্পু, ইজিবাইক ও ভ্যানে গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করছেন তাঁরা। তবে এতে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে প্রায় তিন গুণ ভাড়া গুণতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।

আজ সকালে লোহাগড়া শহরের লক্ষ্মীপাশা বাসস্ট্যান্ডে অন্তত ১০ যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লোহাগড়া থেকে নড়াইল হয়ে খুলনার সোনাডাঙ্গায় যেতে ১৮০ টাকা বাস ভাড়া লাগে। তবে আজ ভেঙে ভেঙে যেতে তাঁদের ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা খরচ হচ্ছে।
সকাল ৯টার দিকে লক্ষ্মীপাশা বাসস্ট্যান্ডে শায়লা পারভিন নামের এক নারীর সঙ্গে কথা হয়। তাঁর

বৃদ্ধ মায়ের চিকিৎসার জন্য তাঁরা খুলনায় যাওয়ার জন্য বের হয়েছেন। শায়লা বলেন, সকাল আটটার দিকে বাসস্ট্যান্ডে এসে জানতে পারেন, খুলনা রুটের বাস বন্ধ। প্রায় এক ঘণ্টা বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষা করেছেন তাঁরা। এখন ইজিবাইকে ভেঙে ভেঙে খুলনায় যাবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
শায়লা বলেন, ‘রাজনীতির জন্যই আমরা শেষ হয়ে গেলাম। তাদের জন্যই আমাদের সাধারণ মানুষের ভোগান্তি।’

তবে বাস চলাচল বন্ধের পেছনে কোনো রাজনৈতিক কারণ নেই বলে দাবি করেছেন নড়াইল জেলা বাস–মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, মহাসড়কে অবৈধভাবে নছিমন, মাহেন্দ্র, ইজিবাইক চলাচল বন্ধের দাবিতে বাসমালিক ও শ্রমিকেরা ধর্মঘট পালন করছেন।