বিপন্ন শুশুক কেটে বিক্রি
টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলায় ধলেশ্বরী নদী থেকে বরশিতে ধরা পড়েছে ১০০ কেজি ওজনের বিপন্ন প্রজাতির একটি শুশুক। পরে এটি কেটে বিক্রি করা হয়।
আজ রোববার ভোরে উপজেলার সহবতপুর ইউনিয়নের জাঙ্গালিয়া এলাকায় সেন্টু মিয়া নামের এক যুবকের বরশিতে ধরা পড়ে শুশুকটি। সেন্টু উপজেলার সহবতপুর ইউনিয়নের চরডাঙ্গা গ্রামের আমজাদ আলীর ছেলে।
শুশুকটি নিয়ে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে ব্যাপক কৌতুহল দেখা যায়। এটি এক নজর দেখতে ভিড় করে মানুষ।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, সেন্টু আগের দিন সন্ধ্যায় বোয়াল মাছ ধরার জন্য বরশি নদীতে ফেলে আসেন। বরশি ফেলার পর ছোট একটি বোয়াল মাছ বরশিতে আটকে যায়। ভোরে মাছটি আনার জন্য সেন্টু নদীর পাড়ে যান। এ সময় শুশুকটি বোয়াল মাছকে গিলতে গিয়ে আটকে যায়। এ দৃশ্য দেখে ভয় পেয়ে সেন্টু চিৎকার করতে থাকেন। তাঁর চিৎকার শুনে নদী পাড়ের লোকজন এগিয়ে আসেন।
পরে স্থানীয়দের সহায়তায় শুশুকটি ডাঙ্গায় তুলে আনা হয়। এরপর এটি স্থানীয় জাঙ্গালিয়া বাজারে নেওয়া হয়। আশেপাশের লোকজন শুশুকটি দেখতে সেখানে ভিড় জমায়। পরে ৫০ জন শুশুকটি ১৫ হাজার টাকায় সেন্টুর কাছ থেকে কিনে নেন। তাঁরা এটি কেটে ভাগ করে নেন।
সেন্টু মিয়া বলেন, ‘প্রথমে বুঝতে পারিনি শুশুক। মনে করেছিলাম বড় মাছ। পরে বিশাল শুশুক দেখে ভয় পেয়ে যাই। পরে লোকজনের সহায়তায় এটি ডাঙায় তোলার পর খুব খুশি হই।’
নাগরপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাসুম বিল্লাহ জানান, শুশুক ধরার খবর পেয়ে তিনি ওই গ্রামে গিয়েছিলেন। কিন্তু পৌঁছানোর আগেই এটি কেটে ভাগ করে বিক্রি করা হয়। শুশুকটির লম্বা ঠোঁট দেখে মনে হচ্ছে এটি ‘গাঙ্গেয় ডলফিন’ প্রজাতির। এই ধরনের শুশুক বিলুপ্তির পথে। যদি এটি জীবিত থাকত, তাহলে উদ্ধার করে অবমুক্ত করা যেত।
জাঙ্গালিয়া গ্রামের অধিবাসী ইসমাইল হোসেন জানান, গ্রামের ৫০ জন শুশুকটি কেটে ভাগ করে নিয়েছেন। তাঁরা শুনেছেন এটি খাওয়া যায়। শুশুক ধরা বা খাওয়া অপরাধ তা গ্রামবাসীর জানা নেই।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমদাদুল হক জানান, শুশুক সংরক্ষিত প্রাণী। এটি বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। তাই শুশুক খেতে নিরুসাহিত করা হয়।
নাগরপুরে শুশুক শিকার এবং এটিকে কেটে বিক্রির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে বন বিভাগ। টাঙ্গাইলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদুজ্জামান জানান, শুশুক ধরা ও বিক্রির খবর পাওয়ার পর বন বিভাগের লোকজন এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়েছে। সোমবার জড়িতদের বিরুদ্ধে বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইনে নাগরপুর থানায় মামলা দায়ের করা হবে।