তেলবাহী লরি উল্টে ৫ গাড়িতে আগুন, দুজনের মৃত্যু
ঢাকার অদূরে সাভারের জোরপুল এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে আজ মঙ্গলবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে তেলবাহী লরি উল্টে আগুন ধরে যায়। ওই আগুনে পাশের আরও চারটি গাড়ি পুড়ে গেছে। আগুনে দগ্ধ হয়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে।
সাভার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ঘটনাস্থলের আশপাশে পানির উৎস না থাকায় আগুন নির্বাপণে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। ছয়টি ইউনিটের মাধ্যমে প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নির্বাপণ করা হয়।
সাভার ফায়ার সার্ভিস ও সাভার হাইওয়ে থানার পুলিশ জানায়, আজ ভোরে তেলবাহী লরি ঢাকা থেকে সাভারের দিকে যাচ্ছিল। লরিটি ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে সাভারের জোরপুল এলাকায় পৌঁছায়। ওই এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে ইউটার্ন বানানোর জন্য সড়কের ওপর রাখা বোল্ডারের সঙ্গে ধাক্কা খায় লরিটি। এতে চালক নিয়ন্ত্রণ হারান। লরিটি সড়কে উল্টে যায়। উল্টে যাওয়ার পরপরই তেলবাহী লরিতে আগুনে লেগে যায়। লরির আগুন একই মুখী একটি কাভার্ড ভ্যান, দুটি ট্রাক ও একটি প্রাইভেট কারে ধরে যায়। আগুনে ঘটনাস্থলে একজন দগ্ধ হয়ে মারা যান। তিনি হলেন সাভারের হেমায়েতপুরের ইকবাল হোসেন। খবর পেয়ে সাভার ফায়ার সার্ভিস ও সাভার হাইওয়ে থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভান।
আগুনে দগ্ধ ৯ জনকে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়। হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, নজরুল ইসলামকে (৪৫) মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। তাঁর শরীরের শতভাগ পুড়ে গেছে। এ ছাড়া আগুনে দগ্ধ মিলন মোল্লার (২২) শরীরের ৪৫ শতাংশ, মিমের (১০) শরীরের ২০ শতাংশ, আল-আমিনের (৩৫) শরীরের ১০ শতাংশ, নিরঞ্জনের (৪৫) শরীরের ৮ শতাংশ, হেলালের (৩০) শরীরের শত ভাগ, আব্দুস সালামের (৩৫) শরীরের ৫ শতাংশ, সাকিবের (২৪) শরীরের শত ভাগ ও আল আমিনের (২২) শরীরের ১৫ শতাংশ পুড়ে গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী মো. ইকবাল বলেন, তিনটি গাড়ি প্রায় পাশাপাশি যাচ্ছিল। তেলের গাড়ি ছিল সবার ডান দিকে, মাঝখানে প্রাইভেট কার এবং বাঁ পাশে ছিল তরমুজবাহী ট্রাক। তেলের গাড়ি ধাক্কা খেয়ে উল্টে গেলে ট্রাক, প্রাইভেট কারসহ অন্য গাড়ি আটকে যায়। তেলের গাড়িতে আগুন লাগলে ওই আগুন অন্য গাড়িতেও লাগে।
সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (সাময়িক দায়িত্ব) মো. বাবুল আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় লোকজন আগুন লাগার পরপরই দগ্ধদের উদ্ধার করে সড়কের পাশে নিয়ে যান। এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
সাভার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ভোর ৫টা ৩৮ মিনিটের দিকে খবর পেয়ে তাঁরা ঘটনাস্থলে যান। দগ্ধদের প্রথমে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। তবে তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়।