লাল নিশানার তোয়াক্কা না করে ভাঙা লাইন দিয়েই ছুটল ট্রেন
রেললাইনের ৯ ইঞ্চি পরিমাণ জায়গা ভেঙে গেছে। স্থানীয় লোকজন তা দেখে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের নজরে আনেন। এরপর কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ ১০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন পার করার জন্য নির্দেশনা দেয়। টাঙানো হয় লাল নিশান। সেখান দিয়ে ওই নির্দেশনা অনুযায়ী দুটি ট্রেন পার হয়। তবে তৃতীয় ট্রেনটি ওই ভাঙা লাইনের ওপর দিয়েই দ্রুতগতিতে পার হয়। এ সময় উপস্থিত রেলকর্মী ও স্থানীয় লোকজন দুর্ঘটনার আশঙ্কায় দৌড়ে দূরে সরে যান। তবে শেষ পর্যন্ত কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। সোমবার বেলা দুইটার দিকে রাজশাহীর নন্দনগাছী ও আড়ানি স্টেশনের মধ্যে এই ঘটনা ঘটে।
এদিকে নির্দেশনা অমান্য করার ঘটনায় বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
রেলওয়ে ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার বেলা ১১টার দিকে বাঘার আড়ানী ও চারঘাটের নন্দনগাছী স্টেশনের মাঝামাঝি স্থানে রেললাইন ভাঙা দেখেন স্থানীয় বাসিন্দা আশরাফুল ইসলাম। তিনিসহ স্থানীয় লোকজন লাল নিশান দেখিয়ে রাজশাহী-চিলাহাটি রুটের আন্তনগর বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ট্রেনটিকে থামিয়ে দেন। এর পেছনে ঢাকা থেকে রাজশাহী আসা আন্তনগর ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনটিকেও আড়ানি স্টেশনে থামিয়ে দেওয়া হয়।
সংস্কারকাজ চলার মধ্যে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে অত্যন্ত ধীরগতিতে বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ও চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনকে অত্যন্ত ধীরগতিতে ভাঙা স্থান পার করে দেওয়া হয়। এরপর ওই স্থানে ভাঙা ফিশপ্লেট খুলে নিয়ে সংস্কারকাজ করছিলেন রেলকর্মীরা। এর মধ্যেই গোপালগঞ্জ থেকে রাজশাহীর উদ্দেশে আসে টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস। ট্রেনটির গতি কমাতে কিছুটা দূরে লাল নিশানও টাঙানো হয়। কিন্তু তা অমান্য করে ট্রেনটি দ্রুতগতিতে ভাঙা অংশ পার হয়।
এ বিষয়ে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) অসীম কুমার তালুকদার জানান, ৯ ইঞ্চি পরিমাণ ‘লাইন ব্রোকেন’ ছিল। এর ওপর দিয়ে সর্বোচ্চ ১০ কিলোমিটার বেগে ট্রেনে পার করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। তা অমান্য করে টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস ট্রেনটি কেন দ্রুতগতিতে পার হলো, এটা নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকেরা জানিয়েছেন, ট্রেনটি প্রায় ৬০ কিলোমিটার গতিতে গিয়েছে। এ ঘটনায় বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।