তারাগঞ্জে বাধার মুখে বন্ধ হওয়া নারী ফুটবল দলের খেলা অনুষ্ঠিত

বাধার মুখে বন্ধ হয়ে যাওয়া নারী ফুটবল দলের খেলা আবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার বিকেলে রংপুরের তারাগঞ্জের বুড়িরহাট উচ্চবিদ্যালয় মাঠেছবি: প্রথম আলো

রংপুরের তারাগঞ্জে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের উপজেলা শাখা ও ইত্তেহাদুল উলামা নামের স্থানীয় একটি সংগঠনের বাধার মুখে বন্ধ হয়ে যাওয়া নারী ফুটবল দলের খেলা আবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বুধবার বিকেলে তারাগঞ্জ উপজেলার বুড়িরহাট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে গাজীপুর বনাম জয়পুরহাট নারী ফুটবল দলের মধ্যে এ খেলা অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় নারী ফুটবল ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

উপজেলা প্রশাসন ও খেলার আয়োজক সূত্রে জানা যায়, ৬ ফেব্রুয়ারি উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের বুড়িরহাট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে নারী ফুটবল দলের খেলার আয়োজন করেন স্থানীয় লোকজন। ওই দিন রাজশাহী ও জয়পুরহাট নারী ফুটবল দল খেলার জন্য মাঠে আসে। কিন্তু ইত্তেহাদুল উলামা নামের সংগঠন ও ইসলামী আন্দোলনের উপজেলা শাখার নেতা–কর্মীরা নারী ফুটবল দলের খেলায় বাধা দেন। তাঁরা খেলা বন্ধের জন্য আন্দোলনের ডাক দেন। স্থানীয় প্রশাসন ওই নেতা-কর্মী এবং খেলার আয়োজকদের নিয়ে কয়েক দফায় আলোচনা করেও কোনো সুরাহা করতে পারেনি। একপর্যায়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে খেলা বন্ধ করে মাঠে ১৪৪ ধারা জারি করে উপজেলা প্রশাসন। এর ফলে নারী ফুটবলাররা না খেলেই ফিরে যান।

২০ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় যুবকেরা নারী ফুটবল দলের খেলার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের কাছে আবেদন করলে প্রশাসন সম্মতি দেয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আজ ওই মাঠে গাজীপুর বনাম জয়পুরহাট নারী ফুটবল দলের খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিকেল সাড়ে ৪টায় খেলা শুরু হয়ে শেষ হয় সাড়ে ৫টায়। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারের মাধ্যমে গাজীপুর নারী ফুটবল দল ৩-২ গোলের ব্যবধানে জয়পুরহাট নারী ফুটবল দলকে পরাজিত করে।

খেলার আগে গ্রামে ও শহরে মাইকিং করা হয়। নারী ফুটবল দলের খেলা দেখার জন্য বিভিন্ন এলাকা থেকে দর্শকেরা এসে ভিড় করেন। খেলা চলাকালে মাঠে দর্শক সারিতে উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে।

আরও পড়ুন

খেলার আয়োজকদের একজন সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ইত্তেহাদুল উলামা সংগঠনের বাধার মুখে ৬ ফেব্রুয়ারি জয়পুরহাট ও রাজশাহী নারী ফুটবল দলের খেলা বন্ধ করে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। এরপর আমরা এ খেলার জন্য আবেদন করি। স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় আজ বুড়িরহাট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে গাজীপুর বনাম জয়পুরহাট নারী দলের খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। খেলায় ব্যাপক দর্শকের উপস্থিতি ছিল।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবেল রানা বলেন, ‘ইত্তেহাদুল উলামা সংগঠনের নেতাদের নিয়ে বসেছিলাম। নারী ফুটবল দলের খেলা নিয়ে এখন আর তাঁদের আপত্তি নেই। খুব শান্তিপূর্ণভাবে খেলাটি অনুষ্ঠিত হয়েছে।’