মানিকগঞ্জে হত্যাকাণ্ডের দুই যুগ পর পলাতক আসামি গ্রেপ্তার
মানিকগঞ্জে আলোচিত নবু প্রামাণিক হত্যাকাণ্ডের দুই যুগ পর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মজিবর রহমানকে (৬০) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গতকাল সোমবার রাতে ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মজিবর রহমান মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার নারিকুলি গ্রামের বাসিন্দা। তবে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপনে ছিলেন বলে জানিয়েছে র্যাব। হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর থেকেই পরিচয় গোপন করে মজিবর রহমান পলাতক ছিলেন।
র্যাব জানিয়েছে, নিহত নবু প্রামাণিকও মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার নারিকুলি গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। ১৯৯৮ সালের ১৬ নভেম্বর বিকেলে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে মজিবরের চাচাতো শ্যালক মো. বরকতের সঙ্গে নবু প্রামাণিকের ছেলে বাদশা মিয়ার বিরোধ সৃষ্টি হয়। এর জেরে আবার মজিববের স্ত্রী জুলেখা ও নবু প্রামাণিকের স্ত্রী নুর নাহারের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। পরে নবু প্রামাণিক তাঁদের থামানোর চেষ্টা করলে মজিবর বইঠা দিয়ে নবু প্রামাণিকের মাথায় আঘাত করেন। এতে নবু প্রামাণিক রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়লে মজিবরসহ তাঁর লোকজন ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। পরে স্থানীয় লোকজন নবু প্রামাণিককে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় ১৯৯৮ সালের ১৭ নভেম্বর নবু প্রামাণিকের স্ত্রী নুর নাহার বাদী হয়ে মজিবর রহমানসহ সাতজনকে আসামি করে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার পর থেকেই মজিবর আত্মগোপনে চলে যান। গ্রেপ্তার অপর ছয় আসামি ১৯৯৯ সালে জামিনে বের হন। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসামি মজিবরের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। অভিযোগপত্রে অন্য ছয় আসামিকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। ২০০৬ সালের জুলাই মাসে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মজিবরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।
র্যাব-৪-এর সিপিসি-৩ মানিকগঞ্জ ক্যাম্পের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মোহাম্মদ আরিফ হোসেন বলেন, ঢাকায় আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় মজিবর রহমান নিজের নাম পরিবর্তন করে মো. কালাম বলে পরিচয় দিতেন। এ ছাড়া তিনি ক্রমাগত পেশা পরিবর্তন করে আসছিলেন। গতকাল রাত ১০টার দিকে ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ মঙ্গলবার সকালে তাঁকে সদর থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রউফ সরকার বলেন, আদালতের রায়ের নথিপত্র পর্যালোচনা করে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।