ফারুক শুধু সিনেমার নয়, আমাদেরও নায়ক ছিলেন

চিত্রনায়ক ফারুক
ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

‘উনি শহরে বড় হলেও বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতে গ্রামের মানুষ হিসেবে পরিচিত হয়েছেন। আমাদের গ্রামের মানুষদের ভালোবাসতেন, গ্রামের মানুষও তাঁকে ভালোবাসতেন। তাঁর গুণের কথা বলে শেষ করা যাবে না। গ্রামের মানুষ একজন অভিভাবককেও হারিয়েছেন।’

চিত্রনায়ক ফারুককে নিয়ে এমন মন্তব্য করেন কালীগঞ্জের বাসিন্দা ও গাজীপুর জেলা প্রশাসনের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আখতারুজ্জামান।

কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র এস এম রবিন হোসেন বলেন, ‘ফারুক ভাই শুধু সিনেমার নায়ক নন, তিনি আমাদের গ্রামেরও নায়ক ছিলেন। তিনি গ্রামে বেড়াতে এলেই সবাইকে ডেকে কথা বলতেন, খোঁজখবর নিতেন। গ্রামের প্রত্যেক মানুষই যেন তাঁর আপনজন ছিলেন। তিনি গ্রামে এসেছেন শুনলে গ্রামের মানুষও তাঁর কাছে যেতেন। কিছু সময় কথা বললেই মনে হতো, তিনি আমাদের অনেক আপনজন।’

আরও পড়ুন

বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজুর রহমান বলেন, ‘ফারুক আমার বয়সে ছোট ছিল। সে গ্রামে এলে কার কী সমস্যা, খোঁজ নিত। কেউ স্কুলে যেতে পারছে না, তাকে স্কুলে পাঠানোর ব্যবস্থা করত। কারও টাকাপয়সার সমস্যা, তাঁকে টাকাপয়সা দিয়ে সহযোগিতা করত।’
গত মঙ্গলবার রাত ৯টায় বাংলা চলচ্চিত্রের ‘মিয়া ভাই’খ্যাত বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন খান পাঠান ওরফে চিত্রনায়ক ফারুকের জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়েছে। জানাজার সময় প্রচণ্ড ঝড়–বৃষ্টি হচ্ছিল, তারপরও সব উপেক্ষা করে শত শত মুসল্লি জানাজায় অংশ নেন।

কালীগঞ্জের তুমলিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণসোম টিউরী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদসংলগ্ন মাঠে তাঁর জানাজা হয়। জানাজার আগে চিত্রনায়ক ফারুককে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনার প্রদান করেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও মো. আসসাদিকজামান। এ সময় সঙ্গে ছিলেন কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফায়েজুর রহমান।

আরও পড়ুন

চিত্রনায়ক ফারুকের লাশ সামনে নিয়ে জানাজায় উপস্থিত সবার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন চিত্রনায়ক ফারুকের ছেলে রওশন হোসেন শরৎ পাঠান। পরে চিত্রনায়ক ফারুকের জানাজা পড়ান টিওরী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আবু সাঈদ।

জানাজায় ডাকসুর সাবেক ভিপি ও সাবেক সংসদ সদস্য মো. আখতারুজ্জামান, সাবেক সংসদ সদস্য এ কে এম ফজলুল হক, কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র এস এম রবিন হোসেন, গাজীপুর জেলা পরিষদের সদস্য মো. দেলোয়ার হোসেন, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবুবকর মিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী, চিত্রনায়ক ফারুকের আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
চিত্রনায়ক ফারুক গত সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় সিঙ্গাপুর মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। তিনি স্ত্রী ফারজানা পাঠান, কন্যা ফারিহা তাবাসসুম পাঠান ও ছেলে রওশন হোসেন, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবসহ অসংখ্য ভক্ত রেখে গেছেন।