হাজতখানায় পরনের শার্ট খুললেন, গলায় পেঁচিয়ে ঝুলে পড়লেন আসামি

নিজের পরনের শার্ট খুলে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে পড়েন আসামি মো. জুয়েল। চাঁন্দগাও থানার সিসিটিভির ফুটেজ থেকেছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও থানার হাজতখানার ভেতর থেকে এক আসামির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁর নাম মো. জুয়েল (২৬)। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে নগরের চান্দগাঁও থানার হাজতখানা এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ বলছে, ডাকাতি মামলার আসামি জুয়েল হাজতখানার ভেতরে ‘আত্মহত্যা’ করেছেন। হাজতখানার সামনে থাকা ক্লোজ সার্কিট সিসি ক্যামেরা দেখে পুলিশ নিশ্চিত হয়। চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, ডাকাতি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকায় জুয়েলকে গতকাল মঙ্গলবার রাতে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পরে তাঁকে থানার হাজতখানায় রাখা হয়। গতকাল হাজতখানায় শুধু জুয়েল ছিলেন।

ওসি আরও বলেন, হাজতখানার ভেতরে ভেন্টিলেটরের সঙ্গে নিজের পরনের শার্ট ঝুলিয়ে আত্মহত্যা করেন জুয়েল। তাঁর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, পারিবারিক হতাশা থেকে আত্মহত্যা করেছেন তিনি। জুয়েলের বিরুদ্ধে ডাকাতি ও অস্ত্র আইনে সাতটি মামলা হয়েছে।

থানার ওই সিসি ক্যামেরার ফুটেজটি প্রথম আলোর হাতে এসেছে। ৭ মিনিট ১১ সেকেন্ডের ওই ফুটেজে দেখা যায়, আসামি জুয়েল নির্জন হাজতখানার গরাদের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। এরপর তিনি নিজের শার্ট খুলে ফেলে হাজতের টয়লেটের দিকে এগিয়ে যান। টয়লেটের দেয়ালে দাঁড়িয়ে শার্টটি বাঁধেন ভেন্টিলেটরের সঙ্গে। তার কিছুক্ষণ পর তাঁকে ঝুলে পড়তে দেখা যায়।

এদিকে খবর পেয়ে থানায় ছুটে আসেন নিহত জুয়েলের মা মিনারা বেগম ও বড় বোন সালমা আক্তার। সেখানে তাঁরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। সালমা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, তিন দিন আগে তাঁর ভাই বাসার বাথরুমে পরনের বেল্ট ঝুলিয়ে আত্মহত্যা চেষ্টা করেছিল। তাঁদের কারণে পারেনি। কেন আত্মহত্যা করছেন, তা জানতে চাইলে সালমা আক্তার বলেন, ‘আমার ভাই আগে খারাপ ছিল। এখন ভালো হওয়ার চেষ্টা করছে। কিস্তি নিয়ে তাকে একটি অটোরিকশা কিনে দিয়েছিল মা। কিন্তু সেটি ভাই চালায়নি। ভাড়ায় আরেকটি গাড়ি চালাচ্ছিল। বিভিন্ন পাওনাদার মা ও ভাইয়ের কাছে ৬০ হাজার টাকার বেশি পেত। মূলত এসব কারণে ভাই আত্মহত্যা করেছে।’

নিহত ব্যক্তির মা মিনারা বেগম বিলাপ করতে করতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘কিস্তির টাকা আমি শোধ করতাম। আমার ছেলে কেন চলে গেল?’