ব্যবসায়ীর গুদামে সরকারি চাল, নামী কোম্পানির বস্তায় ভরে বিক্রির অভিযোগ
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় এক ব্যবসায়ীর গুদাম থেকে সরকারি প্রায় ২২ টন চাল জব্দ করেছে উপজেলা প্রশাসন। গতকাল শনিবার বিকেলে এসব চাল জব্দ করা হয়। পাশাপাশি ওই গুদাম থেকে চাল উৎপানকারী বিভিন্ন নামীদামি প্রতিষ্ঠানের নাম ও লোগোসংবলিত বস্তা জব্দ করা হয়েছে। এসব বস্তায় ভরে সরকারি চাল বিক্রির অভিযোগ রয়েছে ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। তাঁর নাম মজনুর রহমান।
সংশ্লিষ্ট কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গোপন সূত্রে মজনুর রহমানের গুদামে বিপুল পরিমাণ সরকারি চালের সন্ধান পায় উপজেলা প্রশাসন। পরে গতকাল বেলা সাড়ে তিনটার দিকে উপজেলার বাবুরহাটে ওই ব্যবসায়ীর গুদাম থেকে ২১ দশমিক ৭ টন চাল, বস্তা সেলাইয়ের একটি মেশিন, একটি ওজন পরিমাপক যন্ত্রসহ বিভিন্ন কোম্পানির মোড়কযুক্ত চালের শতাধিক খালি প্লাস্টিকের বস্তা জব্দ করা হয়।
খাদ্য অধিদপ্তরের লোগোসংবলিত বস্তাগুলো খুলে নামীদামি সব কোম্পানির মোড়কসংবলিত বস্তায় ভরে চাল বাজারজাত করার চেষ্টা হচ্ছিল। জব্দ করা এসব চাল যাদব চন্দ্র নামের স্থানীয় এক ব্যক্তির জিম্মায় রাখা হয়।
চাল মজুত করা নিয়ে মো. মজনুর রহমান বলেন, ‘আমি পূজা উদ্যাপন কমিটির মাধ্যমে ৩৭ টন চাল ক্রয় করেছি। পর্যায়ক্রমে বিক্রি করার পর ২১ দশমিক ৭ টন চাল আমার গুদামে মজুত ছিল। চটের বস্তার চালের প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ কম থাকায় প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে চালগুলো বাজারজাতের জন্য প্রস্তুত করা হয়।’
ডিমলা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. রুহুল মোছাদ্দেক বলেন, ‘মজনুর রহমান একজন ধান-চাল ব্যবসায়ী। খাদ্য বিভাগের তাঁর ফুডগ্রেন লাইসেন্স আছে। ওই ব্যবসায়ীর ভাষ্যমতে, পূজায় বিভিন্ন মণ্ডপে বরাদ্দ পাওয়া চাল তিনি ক্রয় করেছেন। কিন্তু তিনি বিভিন্ন নামীদামি কোম্পানির মোড়ক ব্যবহার করেছেন। এটা সম্পূর্ণ বেআইনি। এটা তিনি করতে পারেন না। গতকাল বিকেলে ওই চাল ও মালামাল জব্দ করে তাঁর গুদামটি সিলগালা করা হয়েছে। ইউএনও স্যার কী ব্যবস্থা নেন, সে হিসেবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাসেল মিয়া প্রথম আলোকে জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই গুদামে চাল মজুতের বিষয়টি তিনি জানতে পারেন। পরে ২১ দশমিক ৭ টন চাল জব্দ করা হয়। বিষয়টি তদন্তে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে সে অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।