ধোবাউড়ায় অনেক এলাকায় পানি কমেছে, খাবার-সুপেয় পানির সংকট
বৃষ্টি না থাকায় ময়মনসিংহে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। অনেক অঞ্চলে পানি নামতে শুরু করেছে। তবে কিছু এলাকায় পানি আগের অবস্থায়ই আছে। এসব এলাকার মানুষ খাবার ও সুপেয় পানির সংকটে রয়েছেন।
আজ সকাল নয়টার দিকে ধোবাউড়া উপজেলা সদর ব্রিজপাড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ঊরুসমান পানি মাড়িয়ে চলাচল করছেন লোকজন। বাড়িঘরে পানি ঢুকেছে। ধোবাউড়া সদর ইউনিয়নের গুজিয়ারকান্দা গ্রামের সৌরভ সরকার জানান, গতকাল রোববার থেকে তাঁদের এলাকায় পানি একই রকম আছে।
গতকাল সকালের পর আর বৃষ্টি হয়নি। দুপুরের পর থেকে দক্ষিণ মাইজপাড়া, গামারীতলা ও ঘোষগাঁও ইউনিয়নে পানি কমতে শুরু করে। তবে আজ সকালে গোয়াতলা ও ধোবাউড়া সদর এলাকায় পানি বেড়েছে। পোড়াকান্দুলিয়া ইউনিয়নে এলাকায় সকালে পানি অপরিবর্তিত ছিল।
ধোবাউড়া উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের ১৬৪ গ্রামে প্রায় ২ লাখ মানুষের বসবাস। এ উপজেলায় চলমান বন্যায় লক্ষাধিক মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। ৫৮ হাজার মানুষ পানিবন্দী, জানিয়েছেন জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা। এ ছাড়া তলিয়ে গেছে ১১ হাজার ৭০০ হেক্টর আমন ধানের জমি। মৎস্য খাতে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৩৩ কোটি টাকা। এসব এলাকায় খাবারের পাশাপাশি সুপেয় পানির সংকট দেখা দিয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত শারমিন বলেন, আজ গোয়াতলা ও ধোবাউড়া সদর এলাকায় পানি বাড়ছে। দক্ষিণ মাইজপাড়া, গামারীতলা ও ঘোষগাঁও ইউনিয়নে পানি কমতে শুরু করেছে। পোড়াকান্দুলিয়া ইউনিয়নে পানি স্থিতিশীল রয়েছে। আজ গোয়াতলা ও সদর ইউনিয়নে বেশি গুরুত্ব দিয়ে কাজ করা হবে। বেসরকারিভাবেও কিছু ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে। সেগুলো সমন্বয় করে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে।
এদিকে ফুলপুরে একটি ইউনিয়নে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকলেও আরেকটি ইউনিয়নে প্লাবিত হয়েছে। মালিঝি ও কংস নদ দিয়ে পানি ফুলপুরে প্রবেশ করে প্লাবিত হয়েছে। ১৮ হাজার মানুষ পানিবন্দী রয়েছেন এ উপজেলায়।
গতকাল সকাল থেকে উপজেলার সিংহেশ্বর ইউনিয়ন প্লাবিত হয়। আজ সকালে সেখানে পরিস্থিতি আগে মতোই ছিল। তবে আজ পানি বেড়েছে সিংহেশ্বর ইউনিয়নে।
ফুলপুরের ইউএনও এ বি এম আরিফুল ইসলাম বলেন, ছনধরা ইউনিয়নে পানি আর বাড়েনি। আজ উদ্ধারকাজ চালাতে হচ্ছে না। তবে সিংহেশ্বর ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকা আজ নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। গতকাল থেকেই ওই এলাকায় উদ্ধারকাজ শুরু হয়। আজ সেখানে উদ্ধার কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। ছনধরা, সিংহেশ্বর, ফুলপুর সদর, বওলা ও বালিয়া ইউনিয়ন হয়ে পানি নেত্রকোনা হাওরের দিকে নেমে যাবে বলে তিনি জানান।