পঞ্চগড়ে সাফজয়ী ফুটবলার ইয়ারজানের হাতে নতুন ঘরের চাবি তুলে দিলেন জেলা প্রশাসক

পঞ্চগড়ের সাফজয়ী ফুটবলার ইয়ারজান বেগমের হাতে নতুন ঘরের প্রতীকী চাবি তুলে দেন জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম। বুধবার দুপুরে সদর উপজেলার খোপড়াবান্দি গ্রামে
ছবি: সংগৃহীত

সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ মেয়েদের ফুটবলে শিরোপা জয়ের কারিগর পঞ্চগড়ের ফুটবলার (গোলরক্ষক) ইয়ারজান বেগমকে সেমি পাকা ঘর উপহার দিয়েছে জেলা প্রশাসন। এই বাড়ির নাম দেওয়া হয়েছে ‘ইয়ারজান নীড়’। আজ বুধবার দুপুরে সদরের হাঁড়িভাসা ইউনিয়নের খোপড়াবান্দি গ্রামে ইয়ারজানের বাড়িতে গিয়ে তার হাতে নতুন ঘরের প্রতীকী চাবি তুলে দেন জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম।

এ সময় পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকির হোসেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মালিহা খানম, পঞ্চগড় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মিনহাজুর রহমান, হাঁড়িভাসা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাইয়েদ নুর-ই-আলম, ইয়ারজানের বাবা আবদুর রাজ্জাক, মা রেণু বেগমসহ পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীরা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন

জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ইয়ারজানদের ভাঙা বাড়িতে প্রায় চার লাখ টাকা ব্যয়ে দুই কক্ষবিশিষ্ট একটি সেমি পাকা বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি ওয়াশ ব্লক নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে ওয়াশরুম, বেসিন, সুপেয় পানির জন্য বৈদ্যুতিক মোটর ও পানির ট্যাংক স্থাপন করা হয়েছে।

গত ১০ মার্চ নেপালে মেয়েদের সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ টুর্নামেন্টের ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়। টাইব্রেকারে তিনটি শট ঠেকিয়ে বাংলাদেশকে শিরোপা এনে দিয়েছিল ইয়ারজান। পেয়েছিল সেরা গোলরক্ষকের ট্রফি।

আরও পড়ুন
সাফজয়ী বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব–১৬ দলের গোলরক্ষক ইয়ারজান বেগম
বাফুফে

আবদুর রাজ্জাক ও রেণু বেগম দম্পতির দুই মেয়ের মধ্যে ইয়ারজান বড়। ইয়ারজানের বাবা আবদুর রাজ্জাক দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। কাজ করতে পারেন না। মা রেণু বেগম ফসলের খেতে দিনমজুরি করেন, দিনে পান ২৫০ টাকা। সেই টাকায় চলে চারজনের সংসার। আবদুর রাজ্জাকরা চার ভাই। তাঁদের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ উদ্দিনের দেওয়া ২২ শতক জমিতে বসবাস চার ভাইয়ের। কোনো আবাদি জমি নেই তাঁদের।

ইয়ারজানের পরিবার বসবাস করত টিনের জীর্ণশীর্ণ ঘরে। বিষয়টি নজরে এলে তাদের নতুন বাড়ি ও ওয়াশ ব্লক নির্মাণ করে দেওয়ার উদ্যোগ নেয় জেলা প্রশাসন। এবার ঈদের আগেই এমন উপহার পেয়ে উচ্ছ্বসিত ইয়ারজান ও তাঁর পরিবার।

আরও পড়ুন

নতুন ঘর পেয়ে ইয়ারজান সাংবাদিকদের বলে, ‘ঈদের আগে আমাদের জন্য এটি দারুণ একটি উপহার। আমি ও আমার পরিবার খুব খুশি। বিশেষ করে জেলা প্রশাসক স্যার আমাদের সব সময়ই খোঁজখবর নিয়েছেন। এখন নতুন ঘর উপহার দিলেন। এখানে আমরা অন্তত নিশ্চিন্তে দিন কাটাতে পারব।’

জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা চেয়েছি, পঞ্চগড়ের কৃতী সন্তান ইয়ারজান ও তার পরিবার যেন সম্মানের সঙ্গে বসবাস করতে পারে। এ জন্য আমরা সেমি পাকা ঘর, ওয়াশ ব্লক ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা করে দিয়েছি। সরকার সব সময়ই ইয়ারজানের মতো কৃতী খেলোয়াড়ের পরিবারের পাশে রয়েছে।’

আরও পড়ুন