ফেসবুকে বিতর্কিত মন্তব্যের অভিযোগে অধ্যক্ষের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ, ক্লাস বর্জন
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে শিক্ষার্থীদের নিয়ে ফেসবুকে বিতর্কিত মন্তব্যের অভিযোগে উত্তর বাংলা কলেজের অধ্যক্ষ আবদুর রউফ সরকারের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ রোববার দুপুর ১২টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত কলেজের শিক্ষার্থীরা লালমনিরহাট-পাটগ্রাম-বুড়িমারী মহাসড়কের কাকিনা পয়েন্টের শহীদ মানিক চত্বরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন।
এর আগে আন্দোলনরত কয়েক শ শিক্ষার্থী অধ্যক্ষের অপসারণের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দিয়ে কলেজ ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। ‘সর্বস্তরের ছাত্রসমাজ কাকিনা’র ব্যানারে বের করা মিছিলটি শহীদ মানিক চত্বরে এসে মানববন্ধনে মিলিত হয়। কর্মসূচি থেকে বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য অধ্যক্ষ আবদুর রউফ সরকারকে অপসারণের দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা স্কটল্যান্ডপ্রবাসী অর্থনীতিবিদ মোজাম্মেল হককে নিয়ে ফেসবুকে কটূক্তি করার অভিযোগে ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক এস তাবাসসুম রায়হান মুসতাযীরকে কলেজে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।
উল্লেখ্য, অধ্যক্ষের আলোচিত সেই স্ট্যাটাসের ছড়িয়ে পড়া স্ক্রিনশটে দেখা গেছে, আবদুর রউফ সরকার লিখেছেন, ‘আমাদের চোখের সামনে একটি প্রতিবন্ধী প্রজন্ম বেড়ে উঠছে। যারা এ দেশের ইতিহাস–ঐতিহ্য জানে না। এ দেশের সংস্কৃতির সাথে যাদের মানসিক যোগ নেই। এই কোটা সংস্কার আন্দোলনের পেছনে যারা মদদ দিচ্ছে, তাদের উদ্দেশ্য কোটা সংস্কার নয়; অন্য কিছু, যা কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বুঝতে ভুল করেছে...।’ গত ১৮ জুলাই স্ট্যাটাসটি দেওয়া হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
এ ঘটনায় অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়ে কলেজের প্রভাষক তাবাসসুম রায়হান মুসতাযীর জেলা প্রশাসনের কাছে ২০ অক্টোবর লিখিত অভিযোগ করেন। একই দিন তিনি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা অনশন কর্মসূচি পালন করেন। পরে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গত শুক্রবার কালীগঞ্জ থানায় অধ্যক্ষ আবদুর রউফের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য অভিযোগটি রংপুর সাইবার ট্রাইব্যুনালে পাঠিয়েছে থানা–পুলিশ।
শিক্ষার্থীরা দুটি ক্লাস করেছেন উল্লেখ করে কাকিনা উত্তর বাংলা কলেজের উপাধ্যক্ষ মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ব্যানারে কী লিখে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন, সেটি তিনি জানেন না। অধ্যক্ষ আজ কলেজে উপস্থিত ছিলেন না।
ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক এস তাবাসসুম রায়হান মুসতাযীর বলেন, ‘আমার আন্দোলনের কারণে অধ্যক্ষ আবদুর রউফ সরকারকে কলেজ থেকে বিদায় নিতে হচ্ছে—এমন ধারণায় সাবেক গভর্নিং বডির দু–একজন সদস্য কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভুল বুঝিয়ে আমার পেছনে লাগিয়ে দিয়েছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি কলেজে সংঘটিত বিভিন্ন সময়ের অনিয়ম–দুর্নীতির তথ্য প্রকাশ করে দিয়েছি, আরও দিতে পারি। দুর্নীতিবাজদের সেই তিনি যে–ই হোন না কেন, আমি তাঁদের মুখোশ উন্মোচন করছি এবং করব।’