শ্রীপুর থেকে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার আসামি শেখ ফরিদ গ্রেপ্তার
গাজীপুরের শ্রীপুর বাজার থেকে মো. শেখ ফরিদ (৭০) নামে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব-২) একটি দল। বৃহস্পতিবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
গ্রেপ্তার শেখ ফরিদ নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। ২০১৭ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এর পর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন। পরোয়ানা ইস্যু হওয়ার পর থেকে তিনি গ্রেপ্তার এড়ানোর জন্য ছদ্মবেশে আত্মগোপন করেছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শ্রীপুর উপজেলার শ্রীপুর বাজার থেকে গতকাল বুধবার বিকেলে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব-২–এর জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) শিহাব করিমের পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধের সময় নোয়াখালীর বিভিন্ন এলাকায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন শেখ ফরিদ। তিনি অগ্নিসংযোগ, নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধের সময় শেখ ফরিদ ও তাঁর সহযোগীরা নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বাঞ্ছারামপুর গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা, নির্যাতন করাসহ তাঁদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালান।
১৯৭১ সালের ৪ সেপ্টেম্বর বামনী বাজারে বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা শরাফত আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা নিজাম উদ্দিন ফারুক, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওয়াহাবসহ ১০-১২ জনের একটি দলের অবস্থান সম্পর্কে বসুরহাট ও চাপরাশিরহাট রাজাকার ক্যাম্পে তথ্য দেন শেখ ফরিদ। পরে ফরিদসহ পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সদস্যরা ওই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে ছয়জন বীর মুক্তিযোদ্ধা, একজন পথচারী ও দুই অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির মৃত্যু হয়। দলের বাকি মুক্তিযোদ্ধারা বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপন করলে শেখ ফরিদ তাঁদের খুঁজে বের করে গুলি করে হত্যা করেন। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
র্যাবের কর্মকর্তা শিহাব করিম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শেখ ফরিদের অবস্থান নিশ্চিত হওয়া যায়। এরপর শ্রীপুর বাজারে অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।