বরগুনায় ছাত্রলীগের শোক দিবসের মিছিলে হামলা থামাতে গিয়ে লাঠিপেটার ঘটনায় বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহররম আলীকে তাঁর কর্মস্থল থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাঁকে বরিশাল রেঞ্জ পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) কার্যালয়ে বিশেষ দায়িত্বে নিযুক্ত করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে রেঞ্জ ডিআইজি এই আদেশ দিয়েছেন।
বিকেল চারটার দিকে রেঞ্জ ডিআইজি এস এম আক্তারুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল সোমবার বরগুনার ওই ঘটনার পর পুলিশের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাই নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে মহররম আলীকে আপাতত রেঞ্জ কার্যালয়ে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
গতকাল বরগুনায় জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে জেলা ছাত্রলীগের শোকমিছিলে আরেকটি পক্ষ ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে হামলা চালায়। জেলা শিল্পকলা একাডেমির সামনে এ ঘটনার সময় ইটপাটকেলে পুলিশের গাড়ির কাচ ভেঙে যায়। এ সময় পুলিশ ছাত্রলীগের ওই পক্ষকে নিবৃত্ত করতে বেধড়ক লাঠিপেটা করে। বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর সামনেই পুলিশের লাঠিপেটার ঘটনা ঘটে। এ সময় সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু ও কর্তব্যরত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহররম আলীর মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। এ ঘটনা তদন্তে গতকাল রাতেই পুলিশের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
গতকাল রাতে সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু একটি শোকসভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, পুলিশের উদ্দেশ্যই ছিল মারপিট করা। এ সময় তিনি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহররম আলীকে প্রত্যাহার ও তাঁর বিচারের দাবি জানান।
সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর এমন বক্তব্যের পর জেলা ছাত্রলীগ গতকালের হামলার ঘটনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে। সেখানে জেলা ছাত্রলীগের সদ্য ঘোষিত কমিটির সভাপতি রেজাউল কবির ও সাধারণ সম্পাদক তৌশিকুর রহমান বক্তব্য দেন। তাঁরা বলেন, পুলিশ যাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিপেটা করেছে, সেটা না করলেও আরও বড় ধরনের ঘটনা ঘটত। এ জন্য জেলা পুলিশকে ধন্যবাদও জানান তাঁরা।
দীর্ঘ আট বছর পর গত ১৭ জুলাই বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর কাউন্সিল শেষে পদপ্রত্যাশীদের জীবনবৃত্তান্ত নিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতারা ঢাকায় যান। এরপর সেসব জীবনবৃত্তান্ত যাচাই করে গত ২৪ জুলাই রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জেলা ছাত্রলীগের ৩৩ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা দেন। এর পর থেকেই সদ্য ঘোষিত এ কমিটি প্রত্যাখ্যান এবং তাদের প্রতিহত করার ঘোষণা দেয় পদবঞ্চিত একটি পক্ষ। এ নিয়ে কয়েক দফা সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে।