ভ্যানে লাশের স্তূপ করার ঘটনায় ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি

ভ্যানে নিথর দেহের স্তূপ করা ভাইরাল ভিডিও থেকে নেওয়া স্ক্রিনশটভিডিও থেকে সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সাভারের আশুলিয়ায় একটি ভ্যানে লাশের স্তূপ করছে পুলিশ—এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিওর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে পুলিশ।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) ও পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত সাজেদুর রহমানকে প্রধান করে চার সদস্যের এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। আজ রোববার দুপুরে আশুলিয়া থানা পরিদর্শনের পর ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার আহম্মদ মুঈদ সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান।

পুলিশ সুপার আহম্মদ মুঈদ বলেন, ‘ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি আমাদের নজরে এসেছে। ইতিমধ্যে একটি ইনকোয়ারি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি কাজ শুরু করেছে। কমিটি ঘটনাস্থলে কারা উপস্থিত ছিল এবং ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিষয়ে তথ্য পেয়েছে। আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য নামগুলো প্রকাশ করছি না। খুব শিগগিরই আপনাদের সামনে তা প্রকাশ করা হবে। মরদেহ জ্বালিয়ে দেওয়ার বিষয়ে এখনো তেমন কোনো প্রমাণ আমরা পাইনি।’

জড়িত পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা হবে কি না জানতে চাইলে পুলিশ সুপার বলেন, ‘অবশ্যই। যে অপরাধী, সে যে-ই হোক, তাঁর নামে মামলা হবে। পুলিশ আইনের বাইরে নয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘শুধু ছাত্র-জনতা নয়, আমাদের অনেক পুলিশ সদস্যকেও আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে, মানবাধিকার লঙ্ঘন হলে গুরুত্বের সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়ার।’

কমিটিকে কত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে—প্রশ্ন করলে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। হালকাভাবে নিয়ে তড়িঘড়ি করে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলব, এমন নয়। বিষয়টি খুবই গুরুতর হওয়ায় যথাযথভাবে তদন্তপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করে প্রতিবেদন দেবে কমিটি।’

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ১ মিনিট ১৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, মাথায় পুলিশের হেলমেট, সাদা পোশাকের ওপরে পুলিশের ভেস্ট পরা এক ব্যক্তি আরেকজনের সহায়তায় চ্যাংদোলা করে নিথর এক যুবকের দুহাত ধরে ভ্যানের ওপর নিক্ষেপ করছেন। ভ্যানের ওপর নিথর ওই দেহের নিচে আরও বেশ কয়েকটি নিথর দেহ। সেগুলো থেকে ঝরে পড়া রক্তে সড়কের কিছু অংশ ভিজে গেছে। বিছানার চাদরের মতো একটি চাদর দিয়ে তাঁদের ঢেকে রাখা হয়েছে। পাশেই পুলিশের হেলমেট, ভেস্ট পরা আরও কয়েকজনকে দেখা যায়।

আরও পড়ুন

সরেজমিনে ভিডিওটির আশপাশের নানা বিষয় পর্যালোচনা করে এবং স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে স্থানটি আশুলিয়া থানা লাগোয়া ‘ইসলাম পলিমারস অ্যান্ড প্লাস্টিসাইজারস লি. অফিসার ফ্যামিলি কোয়ার্টারের’ পাশের সড়ক বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এএফপির ফ্যাক্ট-চেকিং এডিটর কদরুদ্দীন শিশির তাঁর ফেসবুক টাইমলাইনে ঘটনাটি ৫ আগস্ট আশুলিয়া থানার নিকটবর্তী এলাকায় বলে উল্লেখ করেছেন।