বনবিভাগ বাড়ি ভাঙতে এলে ভুক্তভোগীদের ফোন দিতে বললেন বিএনপি নেতা
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান বন বলেছেন, ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত সখীপুরের একটি বাড়িঘরও উচ্ছেদ করতে দেওয়া হবে না। আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে আটিয়া বন (সংরক্ষণ) অধ্যাদেশ-৮২ নামক কালো আইনটি বাতিল করব।’
টাঙ্গাইলের সখীপুরের ডাকবাংলো চত্বরে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আহমেদ আযম খান এসব কথা বলেন। বনের জমিতে গড়ে ওঠা বাড়িঘর উচ্ছেদের প্রতিবাদে বন বিভাগের বিরুদ্ধে উপজেলা বিএনপি এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি শাজাহান সাজু।
স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্দেশে আযম খান বলেন, ‘বন বিভাগের লোকেরা যদি বাড়ি ভাঙতে আপনার বাড়িতে যায়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে আমাকে ফোন দিবেন।’ এ সময় তিনি মাইকে তাঁর মুঠোফোন নম্বরটি জানান; আর সমাবেশে আসা লোকজন সেই নম্বর মুঠোফোনে যুক্ত (সেভ) করে নেন।
আযম খান বলেন, ১৯৮২ সালে আটিয়া বন অধ্যাদেশ আইনটি করেছিলেন স্বৈরাচার এরশাদ। ১৯৮৭ সালে আওয়ামী লীগ সংসদে গিয়ে এরশাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তা আইনে পরিণত করিয়েছিল। এর পর থেকে এ অঞ্চলের মানুষ ওই আইনের জাঁতাকলে নিষ্পেষিত, বন কর্মকর্তাদের দ্বারা নির্যাতিত।
প্রতিবাদ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সখীপুর পৌরসভা বিএনপির সভাপতি নাসির উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মীর আবুল হাশেম, উপজেলা যুবদলের সভাপতি ফরহাদ ইকবাল, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক একাব্বর হোসেন প্রমুখ।
সম্প্রতি বন বিভাগের নেতৃত্বে যৌথবাহিনী টাঙ্গাইলের বিভিন্ন উপজেলায় বনের জমিতে গড়ে ওঠা বাড়িঘর ও অবৈধ স্থাপনায় উচ্ছেদ অভিযান চালায়। সখীপুরেও উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে বলে বন বিভাগ গত বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী মাইকিং করে। পরে উপজেলা বিএনপি বন বিভাগের বিরুদ্ধে উচ্ছেদের ঘোষণায় পাল্টা মাইকিং করে। দলটি বন বিভাগের উচ্ছেদের প্রতিবাদে নানা কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। কর্মসূচির অংশ হিসেবে শুক্রবার বিকেলে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে প্রতিবাদ সমাবেশ ও সন্ধ্যায় সখীপুরে মশাল মিছিল বের করে দলটি।
এ প্রসঙ্গে টাঙ্গাইল বন বিভাগের বহেরাতৈল রেঞ্জ কর্মকর্তা আমিনুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, উপজেলার সীমানার মধ্যে ১১টি বিটে প্রায় ৪০ হাজার বনভূমির মধ্যে প্রায় ১২ হাজার ভূমি বেদখলে। অর্থাৎ সখীপুরে মোট বনভূমির ৩ ভাগের ১ ভাগই বন বিভাগের দখলে নেই। এ কারণে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দখলকৃত বনভূমি উদ্ধার করে বনায়ন করার। তবে বনের জমিতে থাকা পুরোনো বাড়িঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দির উচ্ছেদ করা হবে না।
বিএনপি প্রতিবাদ কর্মসূচির কারণে উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ হবে কিনা জানতে চাইলে আমিনুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’