মেহেরপুরে বিএনপি নেতার বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর
মেহেরপুরে বিএনপি নেতা মনিরুল ইসলামের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। মনিরুলের অভিযোগ, স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরাই এই হামলায় চালিয়েছেন। মঙ্গলবার রাতে মেহেরপুর পৌর শহরের মুখার্জি পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
মনিরুল ইসলাম মেহেরপুর পৌরসভা বিএনপির সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক। হামলার সঙ্গে জেলা বিএনপির নতুন আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব কামরুল ইসলাম জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মনিরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, তিনি দীর্ঘদিন কামরুল ইসলামের বাড়িতে গৃহশ্রমিকের কাজ করেছেন। গত রাতে কামরুল ইসলাম ও তাঁর নেতা-কর্মীরা তাঁর (মনিরুলের) বাড়িতে এসে হামলা ভাঙচুর করেছেন। একই দলে বিরোধ, ভিন্নমত থাকতে পারে। কিন্তু ভিন্নমত দমন করার জন্য হামলা কোনো সময় উত্তম রাজনীতি হতে পারে না। এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড।
আজ বুধবার সকালে মুখার্জি পাড়ায় মনিরুলের বাড়িতে গিয়ে হামলার ক্ষয়ক্ষতির চিত্র দেখা গেছে। বাড়ির প্রবেশের কর্কশিটের তৈরি ফটকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে দুটি আঘাতের চিহ্ন চোখে পড়ে। আর বসতঘরের ভেতরে ভাঙা টেলিভিশন ও আসবাব ছড়িয়ে–ছিটিয়ে পড়ে আছে। সেখানে আলাপকালে মনিরুলের মা ফিরোজা খাতুন বলেন, এলাকার বিএনপির কর্মী রিপন মিয়ার নেতৃত্বে ১০ থেকে ১২ জনের একটি দল এ হামলা চালিয়েছে।
মনিরুলের বাবা শফিকুল ইসলাম বলেন, রাত ৯টায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা এসেই তাঁর স্ত্রী ফিরোজার হাত থেকে মোবাইল কেড়ে নিয়ে মাটিতে ফেলে দেন। ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে তাঁরা আসবাব ভাঙার সময় আলমারিতে থাকা স্বর্ণের একটি চেইন ও নগদ ৫৫ হাজার টাকা নিয়ে যান। হামলার সময় বিএনপি নেতা কামরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা বিএনপির দুজন নেতা প্রথম আলোকে বলেন, জেলা বিএনপি এত দিন সাবেক সভাপতি মাসুদ অরুণের নেতৃত্বে সংগঠিত ছিল। ১৩ ডিসেম্বর জেলা বিএনপির নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি জাভেদ মাসুদকে আহ্বায়ক ও আইনজীবী কামরুল ইসলামকে সদস্যসচিব করা হয়। এর পর থেকে জেলা বিএনপি দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। কামরুল ইসলাম সম্প্রতি পৌর শহরের বোসপাড়ায় অবস্থিত জেলা বিএনপির কার্যালয় পরিবর্তন করে মুখার্জি পাড়ায় নতুন কার্যালয় তৈরি করেন। এ নিয়েও মাসুদ অরুণ ও তাঁর অনুসারীদের সঙ্গে কামরুলের বিবাদ চলছিল।
মাসুদ অরুণ বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আদালতে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
অভিযোগের বিষয়ে কামরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গত রাতে মনিরুল ইসলামের বাড়িতে স্থানীয় বিএনপি নেতা-কর্মীরা গিয়েছিলেন। বিএনপির নতুন কমিটি গঠনের পর থেকে মনিরুল তাঁর বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তা বলে বেড়াচ্ছেন। তাঁর (মনিরুলের) কাছে নগদ কিছু টাকা পেতেন। দীর্ঘদিন থেকে সেই টাকাও আদায় হচ্ছিল না। এ কারণে তাঁর বাড়িতে যান। শুধু কথাবার্তা বলে ফেরত এসেছেন। হামলা-ভাঙচুর করার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি।
মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন মুঠোফোনে বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ভুক্তভোগী পরিবার লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। এখন মনিরুলের পরিবার মামলা করতে চাইলে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নেবে।