প্রতিদিন প্রায় ৫ কোটি ডিম উৎপাদিত হলেও তা দেশের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট নয় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) উপাচার্য এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া। বিশ্ব ডিম দিবস–২০২৪ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশে জনপ্রতি ডিমের চাহিদা প্রতিবছরে ১৩৪টি। বাংলাদেশের জনশুমারি ও গৃহগণনার তথ্যমতে, ২০২৪ সালের পয়লা জানুয়ারি দেশের জনসংখ্য ছিল ১৭ কোটি ১৫ লাখ ৯০ হাজার। সে অনুযায়ী এই জনসংখ্যার জন্য প্রতিদিন ডিমের প্রয়োজন ৬ কোটি ২৯ লাখ ৯৪ হাজার ৬৮৪টি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পোলট্রি বিজ্ঞান বিভাগের আয়োজনে আজ সোমবার নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বিশ্ব ডিম দিবস-২০২৪ পালন করা হয়। দিবসটি পালনের শুরুতে সকাল সাড়ে নয়টায় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভেতরে অবস্থিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সর্বজনীন ডিম খাওয়ানো কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এরপর সকাল ১০টায় পশুপালন অনুষদের প্রধান ফটকের সামনে সাধারণ মানুষের মধ্যে ডিম বিতরণ করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে থাকা স্কুল, মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ৩ হাজার ডিম বিতরণ করা হয়েছে বলে জানান পোলট্রি বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক বাপন দে।
ডিম বিতরণ শেষে সেখান থেকে শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হল–সংলগ্ন প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলনকক্ষের সামনে এসে শেষ হয়। শোভাযাত্রা শেষে সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলনকক্ষে ‘ডিমে পুষ্টি ডিমে শক্তি, ডিমে আছে রোগমুক্তি’ শীর্ষক একটি আলোচনা সভা হয়।
সভায় উপাচার্য ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার মাধ্যমে উদ্ভাবিত অধিক উৎপাদনশীল লেয়ার মুরগির জাত দেশের ডিম উৎপাদন বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। প্রতিদিনের ৫ কোটি ডিম উৎপাদনও দেশের প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণের জন্য যথেষ্ট নয়। গবেষকদের আরও উন্নত গবেষণার মাধ্যমে ডিমের উৎপাদন বাড়াতে হবে এবং এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পুষ্টি নিশ্চিত করতে টিএসসিতে স্বল্প মূল্যে একটি ডিম, দুটি শসা বা মিষ্টি আলুর সমন্বয়ে একটি পুষ্টি প্যাকেজ চালু করার উদ্যোগ নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টাকে নির্দেশনা দেন উপাচার্য।
পোলট্রি বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান বাপন দের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য ফজলুল হক ভূঁইয়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত ছিলেন বাংলাদেশ অ্যানিমেল হাসব্যান্ড্রি সোসাইটির সভাপতি মো. মাহবুব হাসান এবং ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি মো. মাহবুবুর রহমান। আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের পরিচালক মো. হাম্মাদুর রহমান, পশুপালন অনুষদের ডিন মো. রুহুল আমিন ও ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. শহীদুল হক।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পোলট্রি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. শওকত আলী এবং প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন ইউজিসি অধ্যাপক এস ডি চৌধুরী।