সম্মেলনের তিন মাস পর আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক লীগ যশোর জেলা শাখার দুই সদস্যবিশিষ্ট কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ১৭ বছর পর নতুন এ কমিটি গঠিত হলো। তবে নতুন কমিটির সভাপতি পদ পেয়েছেন আগের আসাদুজ্জামানই। এ পদে ছয় প্রার্থী থাকলেও আগের সভাপতিকে বহাল রাখায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পদপ্রত্যাশীরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নতুন কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়। এতে সাধারণ সম্পাদক পদে নতুন মুখ হিসেবে এসেছেন এস এম নিয়ামত উল্লাহ।
প্রায় দেড় যুগ পর গত ১২ জুলাই যশোর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হওয়া এ সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে সরাসরি নির্বাচন কিংবা কমিটি ঘোষণা না করেই চলে যান কেন্দ্রীয় নেতারা। এর তিন মাস পর নতুন কমিটির ঘোষণা এল।
সম্মেলনে সভাপতি পদপ্রার্থী ছিলেন সদর উপজেলার নওয়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে তিন বছর ও পূর্ণাঙ্গ কমিটির সভাপতি হিসেবে ১৮ বছর ধরে শীর্ষ পদ দখল করে আছেন আসাদুজ্জামান। এবার অন্তত তাঁরা শীর্ষ পদে নতুন নেতৃত্ব আশা করেছিলেন। কিন্তু সম্মেলনে ভোটাভুটির মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন না করে কেন্দ্র থেকে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আবারও সেই একই ব্যক্তিকে সভাপতি পদ দেওয়া হলো।হুমায়ুন কবির বলেন, ‘আমাকে সভাপতি পদ না দিলেও অন্তত নতুন কাউকে এ পদের দায়িত্ব দেওয়া উচিত ছিল। এতে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ বেড়েছে।’
উল্লেখ্য, এর আগে ২০০৬ সালে যশোর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে আসাদুজ্জামানকে সভাপতি ও নূরে আলম সিদ্দিকীকে সাধারণ সম্পাদক করে ৭১ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। দীর্ঘদিন মেয়াদোত্তীর্ণের পর ২০২২ বছরের ২৮ জুন এ কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়। এরপর নতুন কমিটি গঠনের লক্ষ্যে একই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠানের তারিখ ঘোষণা করা হয়। ওই সম্মেলন সফল করতে ভেঙে দেওয়া কমিটির সভাপতি আসাদুজ্জামানকে আহ্বায়ক করে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তবে পরে আর সেই সম্মেলন হয়নি।
২১ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করা ব্যক্তিকেই আবারও সভাপতির দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘সভাপতি পদে আগ্রহী ছয় প্রার্থীর বিষয়ে তথ্য যাচাই–বাছাই করে দেখা হয়েছে। এর মধ্যে আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে তুলনামূলক অভিযোগ ও বিতর্ক কম। এ কারণে তাঁকে আবারও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’ তাহলে নতুন নেতৃত্বের বিকাশ কীভাবে হবে, এ প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি তিনি।
নতুন কমিটি ঘোষণার বিজ্ঞপ্তিতে পূর্ণাঙ্গ কমিটির বিষয়ে কোনো নির্দেশনা নেই। এ বিষয়ে গাজী মেজবাউল হোসেন বলেন, ‘বিজ্ঞপ্তিতে এমন নির্দেশনা না থাকলেও গঠনতন্ত্রে বলা আছে, ৪৫ দিনের মধ্যে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে হবে। এ–সংক্রান্ত চিঠি দ্রুতই নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে পাঠানো হবে।’