মন্ত্রণালয়ের ভুয়া আদেশ এনে বালুমহাল ইজারা নেওয়ার চেষ্টা, আটক ১
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার একটি চা–বাগানের ২০ একর সিলিকা বালুমহাল মন্ত্রণালয় থেকে ইজারা এনেছেন—এমন ভুয়া আদেশনামা জেলা প্রশাসকের কাছে জমা দিয়ে আটক হয়েছেন দুলাল মিয়া (৫০) নামের এক ব্যক্তি। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওই ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশে দিয়েছেন হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক। আটক ওই ব্যক্তির বাড়ি হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার ইনাতাবাজ গ্রামে।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার চন্দ্রিছড়া চা-বাগান এলাকায় অবস্থিত চণ্ডিছড়া টিজি ও রামগঙ্গা সিলিকা বালুমহালের ২০ একর ভূমি মেসার্স সালমান এন্টারপ্রাইজ বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে ইজারা নিয়েছেন—মন্ত্রণালয়ের উপসচিব দীপক কুমার চক্রবর্তীর স্বাক্ষরিত এমন একটি আদেশনামা প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী দুলাল মিয়া আজ মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটায় হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে আসেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আরও তিন ব্যক্তি।
চিঠি পাওয়ার পর হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ফরিদুর রহমানের সন্দেহ হয়। তিনি বিষয়টি যাচাই-বাছাই করতে আদেশনামার কপিটি মন্ত্রণালয়ে পাঠান। পরে সেখান থেকে মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব বেগম সায়মা আক্তার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে জানানো হয়, এ ধরনের কোনো আদেশ মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া হয়নি। পরে জেলা প্রশাসক দুলাল মিয়াকে আটক করেন। খবর দেওয়া হয় হবিগঞ্জ সদর মডেল থানা-পুলিশকে। সন্ধ্যা সাতটায় আটক ব্যক্তির বিরুদ্ধে আদেশনামা জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগে এনে হবিগঞ্জ সদর থানায় একটি মামলা করা হয় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। ঘটনার সময় দুলাল মিয়ার সঙ্গে থাকা অপর তিন ব্যক্তি আটক হওয়ার ভয়ে তাৎক্ষণিক জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে পালিয়ে যান।
দুলাল মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের একজন দালালকে ৫০ লাখ টাকা দিয়েছিলাম মন্ত্রণালয় থেকে ইজারার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে। সে আমাকে এ ইজারা আদেশনামাটি দিয়েছে। এটি ভুয়া কি না, তা জানি না।’
হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) প্রিয়াঙ্কা পাল প্রথম আলোকে বলেন, যে সিলিকা বালুমহালটি মন্ত্রণালয় থেকে ইজারা আনার দাবি করা হয়, প্রকৃতপক্ষে এ বালুমহাল নিয়ে আদালতে মামলা রয়েছে। এ বালুমহাল ইজারা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
জেলা প্রশাসক ফরিদুর রহমান বলেন, ‘মন্ত্রণালয় থেকে এ সিলিকা বালুমহাল ইজারা দেওয়া হয়নি। তা ছাড়া চা-বাগানের ভেতর এ ধরনের বালুমহাল ইজারা দেওয়ার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধও আছে। আদেশনামা পাওয়ার পর সন্দেহ হলে তা মন্ত্রণালয়ে পাঠাই। সেখান থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়, এ ইজারা আদেশ সেখান থেকে দেওয়া হয়নি। আটক ব্যক্তির বিরুদ্ধে থানায় মামলা দেওয়া হয়েছে।’