ডাকাত–আতঙ্কে ঝালকাঠি পৌরসভায় মাইকিং, মব তৈরি করে শ্রমিকদের মারধরের অভিযোগ
‘এলাকায় ডাকাত পড়েছে’ বলে গতকাল সোমবার রাতে ঝালকাঠি শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে কয়েকটি মসজিদে মাইকিং করা হয়। পরে এলাকার লোকজন দেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রাস্তায় নেমে আসেন। পরে তাঁরা ৯ জন নির্মাণশ্রমিককে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করেন। রাত একটার দিকে পৌরসভার বাসন্ডা ঝোড়াপোল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
তবে সদর থানা–পুলিশ জানিয়েছে, গুজব ছড়িয়ে পড়ায় মানুষের মধ্যে ডাকাত–আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। জেলার কোথাও ডাকাতির ঘটনা ঘটেনি। আটক ওই ৯ জন নিরীহ শ্রমিক। এ সম্পর্কে ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, প্রাথমিকভাবে অনুসন্ধানে জানা গেছে, আটক ব্যক্তিরা নিরীহ শ্রমিক। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঝোড়াপোল এলাকায় রাত একটার দিকে বাসন্ডা খালের তীরবর্তী জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য বনি আমিন বাকলাইয়ের বাংলো বাড়ির সামনের ঘাটলায় নির্মাণশ্রমিকদের মালামালবোঝাই একটি ট্রলার থামে। এ সময় আইনজীবী বনি আমিন সিসিটিভির ফুটেজে বিষয়টি দেখতে পেয়ে মুঠোফোনে এলাকার কয়েকজনকে জানান। তখন এলাকার মানুষ সংঘবদ্ধ হয়ে ৯ জন শ্রমিককে আটক করে পিটুনি দেন। পরে তাঁরা পুলিশকে বিষয়টি জানান। পুলিশ গিয়ে ওই শ্রমিকদের উদ্ধার করে থানায় আনে। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
এদিকে শ্রমিকদের আটক করার খবর শুনে স্থানীয় ঠিকাদার ফাইজুল ইসলাম ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি এলাকার লোকজনকে জানান, ওই ৯ শ্রমিক তাঁর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। এরপরও তাঁকে লাঞ্ছিত করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এ বিষয়ে ফাইজুল ইসলাম বলেন, ‘পিরোজপুরের স্বরূপকাঠিতে আমার একটি সেতু নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। বিল বকেয়া থাকায় কাজ বন্ধ করে দিয়ে শ্রমিকদের এলাকায় চলে আসতে বলেছিলাম। রাত গভীর হওয়ায় আইনজীবী বনি আমিনের বাড়ির সামনের ঘাটলায় শ্রমিকদের ট্রলার ভেড়াতে বলি। এ সময় নিরীহ শ্রমিকদের ডাকাত বানিয়ে মব জাস্টিস করা হয়েছে।’
বনি আমিন বাকলাই বলেন, তাঁদের (শ্রমিক) সন্দেহজনক আচরণ ও চলাচলের কারণে এলাকাবাসী আটক করে পুলিশে দিয়েছেন।