নোয়াখালী-২ (সেনবাগ ও সোনাইমুড়ী আংশিক) আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোরশেদ আলমের নির্বাচনী কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল বুধবার রাতে কাদরা ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের খলিফা তোলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও সংসদ সদস্য মোরশেদ আলম বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনীর ব্যক্তিগত কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি মোহা. আতাউর রহমান ভূঁইয়ার (কাঁচি প্রতীক) সমর্থকেরা এ হামলা করেছেন। আতাউরের সমর্থকেরা বিভিন্ন সময় তাঁকে হত্যার হুমকিও দিয়েছেন।
কাদরা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি নিজাম উদ্দিন বলেন, চাঁদপুর গ্রামের খলিফা তোলা এলাকায় নৌকার নির্বাচনী কার্যালয়ে গতকাল রাতে দুর্বৃত্তরা আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে ওই কার্যালয়ের একাংশ পুড়ে যায়। সকালে কার্যালয়ের আশপাশের বাসিন্দারা সেটা দেখে তাঁদের খবর দেন। পরে তাঁরা বিষয়টি থানা-পুলিশকে জানান।
সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাজিম উদ্দিন বলেন, নৌকার একটি নির্বাচনী কার্যালয়ের কিছু কাপড় আগুনে পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খবর পেয়ে তিনি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বিষয়টি নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটি তদন্ত করবে। তবে এ বিষয়ে থানায় লিখিতভাবে এখনো কোনো অভিযোগ করেননি নৌকার প্রার্থী।
এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার করা সংবাদ সম্মেলনে সংসদ সদস্য মোরশেদ আলম বলেন, গত দুটি সংসদ নির্বাচনে তিনি নৌকার প্রতীকে নির্বাচন করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি তৃতীয়বার দলীয় মনোনয়ন পেয়ে প্রচার শুরু করেন। এর পর থেকেই কাঁচি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী তাঁর বিরুদ্ধে নানা বিষোদ্গার করছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীরা নানা সময় তাঁকে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন। ২৫ ডিসেম্বর একটি নির্বাচনী পথসভায় তাঁর ওপর হামলা করা হয়। উপস্থিত নেতা-কর্মীরা হামলাকারীকে প্রতিহত করেন। পরে তাঁকে পুলিশ আটক করেছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।
সর্বশেষ গতকাল রাতে সেনবাগ উপজেলার কাদরা ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের খলিফাপাড়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমান ভূঁইয়ার লোকজন তাঁর নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর চালিয়ে অগ্নিসংযোগ করেছেন। তিনি অবিলম্বে এসব ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
এর আগে ছাতারপাইয়া ইউনিয়নের ঠনারপাড় গ্রামে বিএনপির নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রহমানের বাড়িতে হামলার ঘটনায় তাঁর ৬৫ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা মামলা’ দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
তবে নৌকার প্রার্থীর অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সহসভাপতি মোহা. আতাউর রহমান ভূঁইয়া। তিনি বলেন, নৌকার প্রার্থী নির্বাচনী প্রচারণার শুরুতেই বুঝতে পেরেছেন, এলাকার মানুষজন তাঁকে পছন্দ করেন না। দলমত-নির্বিশেষে মানুষ তাঁর প্রতীক ‘কাঁচির’ পক্ষে মাঠে কাজ করছেন। এতে তিনি বেসামাল হয়ে পড়েছেন। তিনি দলীয় কর্মীদের লেলিয়ে দিয়েছেন তাঁর সমর্থকদের বিরুদ্ধে। তাঁরা ইতিমধ্যে বাড়িঘরে সশস্ত্র হামলাও চালিয়েছেন। প্রকাশ্যে গুলি করেছেন। অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়ে ভোটারদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন।