গাবতলীতে বেশির ভাগ বাসের টিকিট কাউন্টার বন্ধ, দূরপাল্লার বাস ছাড়ছে না

গাবতলীতে বাস টার্মিনালে বেশির ভাগ বাস কোম্পানির টিকিট বিক্রির কাউন্টার বন্ধ রাখা হয়েছে। ১ নভেম্বর
ছবি: ড্রিঞ্জা চাম্বুগং

বিএনপির ডাকা অবরোধের দ্বিতীয় দিন আজ বুধবার গাবতলীতে বাস টার্মিনালে বেশির ভাগ বাস কোম্পানির টিকিট বিক্রির কাউন্টার বন্ধ রাখা হয়েছে। হাতে গোনা যে কটি কাউন্টার খোলা আছে, সেগুলোতেও কোনো গন্তব্যের টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে না।

অন্যদিকে গাবতলী বাস টার্মিনালে দূরপাল্লার কোনো গন্তব্যের যাত্রীও চোখে পড়েনি। মাঝেমধ্যে যে এক-দুজন যাত্রী টিকিটের খোঁজে টার্মিনালে যাচ্ছেন, তাঁদের বাস বন্ধ বলে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

বিএনপির ডাকা টানা তিন দিনের অবরোধের দ্বিতীয় দিন আজ সকাল সাড়ে নয়টার দিকে গাবতলী আন্তজেলা বাস টার্মিনালে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।

বিভিন্ন বাস কোম্পানির প্রতিনিধিরা জানান, প্রথমত, যাত্রী একেবারে নেই। যাত্রী ছাড়া তো বাস চালানো অসম্ভব। আর দ্বিতীয়ত, রাস্তায় সহিংসতার আশঙ্কা। বিচ্ছিন্নভাবে অনেক স্থানে সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। নিরাপত্তার স্বার্থে তাই বাস বন্ধ রাখা হয়েছে।

সরেজমিন দেখা যায়, গাবতলী টার্মিনালে গোল্ডেন লাইন, সাকুরা পরিবহন, জেএল লাইন, দর্শনা ডিলাক্স, সুবর্ণ পরিবহন, ইসলাম পরিবহন, সৌদিয়া পরিবহন ও স্টার এক্সপ্রেস বাস কোম্পানির টিকিট বিক্রির কাউন্টারগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। হানিফ, শ্যামলী ও সোহাগ পরিবহনের দু-একটি কাউন্টার খোলা। তবে এসব কাউন্টার থেকে কোনো টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে না। আবার কিছু কাউন্টার থেকে বিকেলের পর যোগাযোগ করতে বলে দিচ্ছেন সেখানে থাকা ব্যক্তিরা।

হানিফ পরিবহনের একটি কাউন্টারের টিকিট বিক্রেতা রাজীব হোসেন বলেন, ‘অবরোধের কারণে যাত্রী একেবারে নেই। এখন বাস চলুক আর না–ই চলুক, কাউন্টার খোলা আমার ডিউটি। তাই খোলা রেখেছি।’

গ্রিন সেন্ট মার্টিন পরিবহনের টিকিট বিক্রির কাউন্টার খোলা পাওয়া যায়। পরিবহনটি রাতে যাত্রীসেবা দেয়। দিনে তাদের কোনো বাস নেই। তবে রাতের জন্য কোনো অগ্রিম টিকিট কাউন্টার থেকে বিক্রি করা হচ্ছিল না।

টিকিট বিক্রেতা তারেক হোসাইন জানান, যাঁরা টিকিটের খোঁজ নিতে আসছেন, তাঁদের যোগাযোগের নম্বর রাখা হচ্ছে। যাত্রীসংখ্যা ভালো হলে রাতে অন্তত একটি বাস ছাড়ার চিন্তাভাবনা আছে।

এদিকে মাঝেমধ্যে এক-দুজন টিকিটের খোঁজ করতে গাবতলীতে আসছেন। বাস বন্ধ থাকায় এসব যাত্রী হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন।

এমন দুজন দুবাইপ্রবাসী সাইফুল ইসলাম ও রিপন আহমেদ। তাঁদের গ্রামের বাড়ি মেহেরপুরে। ভোর চারটার বিমানে তাঁরা দুবাই থেকে এসেছেন। পরে সকাল সাড়ে আটটার দিকে তাঁরা গাবতলী বাস টার্মিনালে আসেন।

মেহেরপুর যায়—এমন প্রায় সাতটি পরিবহন রয়েছে গাবতলীতে। সব কটিতে খোঁজ নিয়েছেন। কিন্তু কোনো বাসের কাউন্টার থেকে বাস ছাড়ার বিষয়ে নিশ্চয়তা দিতে পারেননি।

সকাল সোয়া ১০টার দিকে দুজনে টার্মিনাল ছেড়ে চলে যাচ্ছিলেন। এ সময় সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুবাই থেকে ফিরলাম। অবরোধ চলছে জানতাম না। এখন চাচাতো ভাইয়ের বাসা সাভারে যাচ্ছি। যদি রাতে কোনো বাস ছাড়ে, তখন যাব। নয়তো অন্য কোনো উপায় দেখব, কিন্তু আপাতত সাভার যাচ্ছি।’