গাজীপুরে মধ্যরাতে আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে গুলিবর্ষণ ও অগ্নিসংযোগ
গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম মোল্লার বাড়িতে গুলিবর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে শ্রীপুর পৌর এলাকার দক্ষিণ ভাঙ্গাহাটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নূরে আলম মোল্লা বলেন, অগ্নিসংযোগে তাঁর ঘরের বারান্দায় রাখা আসবাবপত্র পুড়ে গেছে, পুড়েছে কিছু পোষা পাখি। গুলির আঘাতে বারান্দায় গ্রিলের একটি অংশে থাকা স্টিলের দরজা ও কাচের দরজা ছিদ্র হয়েছে। তবে হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
এ ঘটনার একটি সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া গেছে। ফুটেজে দেখা যায়, বাড়ির প্রধান ফটকের বাইরে মুখোশধারী পাঁচ ব্যক্তি প্রথমে সেখানে থাকা একটি বৈদ্যুতিক বাল্ব ভেঙে ফেলে। এরপর বাড়ির ফটক লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে তারা। তাদের নয়টি গুলি ছুড়তে দেখা যায়। কুঠারসদৃশ একটি বস্তু দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ ফটক ভাঙার চেষ্টা করে হামলাকারীরা। একপর্যায়ে ফটক ভাঙতে না পেরে তারা বাইরে থেকে পেট্রল ছিটিয়ে নূরে আলম মোল্লার থাকার ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। গুলির শব্দে আশপাশের লোকজন চলে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন আগুন নেভান।
নূরে আলম মোল্লা ঘটনার বর্ণনায় প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাতে তিনি নিজ বাড়িতে ঘুমাচ্ছিলেন। রাত ১২টা ১৮ মিনিটে মো. আক্তার খান পরিচয়ে এক ব্যক্তি তাঁর মুঠোফোন নম্বরে কল দেন। তিনি তাঁর বাড়িতে আসতে চান বলে তাঁকে (নূরে আলম মোল্লা) বাড়ির বাইরে বের হতে বলেন। রাতে বাড়ির বাইরে বের হবেন না বলে জানান তিনি। এতে উত্তেজিত হয়ে আক্তার খান পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তি তাঁকে গালিগালাজ করেন, মেরে ফেলার হুমকি দেন।
নূরে আলম মোল্লা বলেন, কথা চলা অবস্থায় মুঠোফোনটি অন্য এক ব্যক্তিকে দেন আক্তার খান। ওই ব্যক্তি নিজেকে হাসান খন্দকার পরিচয় দিয়ে গালাগাল শুরু করেন। তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, ‘আজ রাতে তোকে আমি মাইরা ফালাবো।’ এরপর ১২টা ২৯ মিনিটে মো. আক্তার খান আবারও নূরে আলম মোল্লাকে কল করেন। রাত তিনটার দিকে দুটি মোটরসাইকেলে করে পাঁচজন ব্যক্তি বাড়ির সামনে আসে। তারা এসেই গুলিবর্ষণ ও অগ্নিসংযোগ করে।
নূরে আলম মোল্লা বলেন, ‘আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের লোকজন আমাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে এ হামলা চালিয়েছে। আমি আইনের আশ্রয় নেব।’ নূরে আলম মোল্লা সম্প্রতি শেষ হওয়া জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহাম্মদ ইকবাল হোসেনের (সবুজ) অনুসারী হিসেবে কাজ করেছিলেন।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ্ জামান আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। ঘটনার তদন্ত করছি। ঘটনাস্থল থেকে পাঁচটি গুলির খোসা উদ্ধার হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’